১১
নভেম্বর ২২৬৪, ভোর হবে কিছুক্ষন পর। ক্লান
রেডের
ঊষ্ণতা বেড়ে গেছে আগের তুলনায়।
শাহরিয়ার
নিজেই এখন স্ট্যান্ডবাই মুডে।
কপালের
আশেপাশে বিন্দুবিন্দু ঘাম জমে আছে।
তীক্ষ্ণত্ব
ভাব চোখের লেন্সে।
সার্ভার
হ্যাক চলছে,
বলতে না
বলতেই এক কণা ঘাম চপ করে
শাহরিয়ারের
কপাল বেয়ে নিচে পড়ল।
নভেম্বর-ডিসেম্বর
চলছে ক্যালেন্ডারের
পাতায়।
তবুও ক্লান গুলোতে শীতের আমেজ বলে
আর কিছু
নেই এখন। গ্লোবালসিস্টেম একদম
ডাউন।
রুমের
ভেতর সব সময় এয়ার কুলার চালাতে হয়।
কিন্তু
সমস্যা হচ্ছে এয়ার কুলার হ্যাক হয়েছে।
ডিজিটাল
এয়ার কুলার! হাহ (দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল
শাহরিয়ার)
ক্লানের
কেউ শাহরিয়ারের এয়ার কুলারের
পাসওয়ার্ড
বদলে দিয়েছে। যত্তসব ছিঁচকে
হ্যাকার।
প্যান্টের চেইন লাগতে মনে থাকে
কি থাকে
না অথচ হ্যাকিং শেখা চাই।
বদমাশ
ইয়োটা! সেও এক আজব চিজ! ঠিক করে
দিতে
বললাম; করল না! বলল," অ্যাই আম বিজি।"
ইয়োটা নাছোড়বান্দা! না মানে স্রেফ না!
হাজার
বললেও আজ কিছু করবে না, এই
ব্যাপারে।
মাথা
দুলিয়ে আমায় বলল "আমি নেক্সট ডে করে
দেব
"
শাহরিয়ার
রাগ দেখাতে পারে না। আজ
গরমটাও
জেঁকেছে বেশ। কাল এক্সাম, পড়া
আছে;
তার মাঝে আবার এই প্রব্লেম! উফ.....
হায় রে!
ইলেকট্রিক
ধাতব, রাগের মানে বোঝে না
কিন্তু
ভালোবাসার মানে ভাল বোঝে। (মনে
মনে বলল
কথাগুলো)
হয়ত তাই
ইলিনের
সাথে তাই গাণিতিক বোঝাপড়া
অসাধারণ!
কি
বোর্ডের খটখট আওয়াজ তুলে এন্টার চাপল
শাহরিয়ার।
ব্লুপ,
ব্রুম পিপ পিপ......
পিসির
প্লাগে ইন্ডিকেশন বাতির বর্ণ সবুজ
দেখাচ্ছে,
উফ! শাহরিয়ার আজ সফল।
এসির
ঘিনঘিনে আওয়াজ বেড়ে গেছে, মানে
এটা
চলছে। ঘামের গায়ে শীতল ছোঁয়া লাগল।
যেন
সমুদ্রের পাড়ে এক দমকা বাতাস ধাক্কা
দিল
হঠাৎ।
গা
এলিয়ে দিল চেয়ারে, পা টেবিলে। হাতের
এসির
কন্ট্রোলারে আপ আরোতে স্পর্শ বাড়ছে
এখন।
কিন্তু
এই কাজটা কে করেছিল, খুঁজে পেল না
শাহরিয়ার।
২২৬৪
সালের আজ সময়টা এমন যে, যে বাচ্চা
ডায়পার
পড়ে সেও হাতে স্মার্টফোন নিয়ে
ঘোরে।
তাই কে বা কারা কখন
হ্যাক
করে তার কূল কিনারা করা অসম্ভব
ব্যাপার!
যদিও
নির্বাচিত মেয়র রামাকান্ত মুসাফির এই
ব্যাপারে
সবাইকে নিশ্চিত করেছে।!?
সাইবার
নিরাপত্তা জোরদার হবে, আইপি
ট্রাকিং
নিশ্চিত হবে, সেইসাথে ডোমেইনের
নিরাপত্তা।
শাহরিয়ার
ভাবছে অন্যকিছু। (কি করবে সে?)
এয়ার
কুলারের বাতাসে এবার গা শিউরে উঠল।
ঘামের
শরীর শুকোতে শুরু করেছে। ঠান্ডা
লাগবে
এবার!
শাহরিয়ার
ভাবছে,
"আজ
বাবা-মাকে সাথে পেলে ভালো লাগত
অনেকটা।
কি বা দরকার ছিল দূরের ক্লানে
থাকতে?"
মনে মনে অনেক কিছু শাহরিয়ার
ভাবতে
থাকে।
সাইলেন্ট
মুড ভেঙে, হঠাৎ
গ্রিং
ঘটরমটর... আর ইউ ওরিড?
ও কে?
তোতা!
ইয়োটা
মুখেরতোড় বাঁকিয়ে "নো, ইটস ইয়োটা "!
ইট ইজ'ট
সিম ফানি এট অল।
হাহাহাহা......
আচ্ছা,
আমি কি আদর করে এই নামে ডাকতে
পারি
না?
না!
গম্ভীর কন্ঠে ইয়োটার জবাব।
"ওকে,
ওকে চিল বাডি। অ্যাম সরি অ্যান্ড
অ্যাম
নট ডুয়িং দিস এনি মোর " শাহরিয়ার বলল।
ইলিন
কোথায়?
ইয়োটা
বলল "ও চার্জে আছে। বাই দ্যা ওয়ে, ডু
ইউ নিড
কফি?"
"নো
থ্যাংকস বাডি। কাল আমার এক্সাম;
তোমাকে
বললাম, কিছু সলভ করে দাও। সেটাও
করলে না।
প্রশ্নগুলো কি কঠিন কি করে
বোঝাবো?
"
"আই
নো, কিন্তু এই ব্যাপারে আমি কিছু করব না।
ইউ নো,
পিপল আর মাচ সেলফিস! "
এই যা!
কেন? ডিড আই?
নট ইউ,
বলেই ঘটঘটানি আওয়াজ তুলে চলে গেল
ইয়োটা।
বেচারা চার্জ থেকে ছুটে এসেছিল
হেল্প
করতে। ইন্ডিকেটরের লাল বাতি জ্বলছে
ওর।
শাহরিয়ার
ভেবে পেল না এখন কি করবে! পড়বে
না
ঘুমাতে যাবে!
ঘড়ির
রেডিয়াম কাটার গতি ধীরে ধীরে
বাড়ছে,
এক সেকেন্ড করে এগিয়ে যাচ্ছে এটা।
হাত
ঘড়িটা বদলে ফেলেছে শাহরিয়ার।
পাশের
বাসার মেয়েটা। লাস্ট উইকে গিফট
করেছে
শাহরিয়ার কে আর বলেছে, "নো স্মার্ট
ঘড়ি,
এখন থেকে এটা "
ঘড়ির
ফিতেটা অসাধারণ, ব্লাকের সাথে ব্লু
স্ট্রাইপ।
মেয়েটার পছন্দের রঙের সাথে
নিজের
পছন্দের রঙ মিলেছে। ব্লু এন্ড ব্ল্যাক!
ঘরের
পেইন্ট ও বদলে ফেলেছে শাহরিয়ার।
ঘরের
দেয়ালটা এখন আকাশী নীল।
হঠাৎ
মনে হলো,
ইয়োটার
ক্যাশ ক্লিয়ার করা দরকার। চার বছরে
ক্যাশ
জমে আছে। ঘন্টা তিনেক পর কাজটা
করতে
হবে।
সব ভুলে
পড়াশোনায় মন দিল শাহরিয়ার।
রাত
চারটে দশ!
চ্যাপ্টারঃ
টিসিপি এন্ড ইউডিপি পোর্টে।
স্টাডি
চলছে...........
সকাল
নয়টা, চোখের সাদায় লালচে দাগ,
ব্যাগে
খাতাটা ভরে তাকাল শাহরিয়ার।
গুড
মর্নিং শাহরিয়ার!
হে, গুড
মর্নিং!! ইলিন
"অ্যাই
জাস্ট মেইড ইউর ব্রেইকফ্যাস্ট।" ইলিন
বলল।
বাই
দ্যা ওয়ে, ইলিন ক্যান আই হ্যাভ সাম
"বনলেট
"?
-সিউর।
-ইয়াপ!!!
আই জাস্ট লাভ ইট।
-ওন মাই
ওয়ে।
প্লিজ
ডু ইট কুইক, আই হ্যাভ টু গো আর্লি। এক্সাম
আছে
কলেজে।
-ওকে।
যারা
বনলেট কি জানেন না তাদের বলছি, এটা
ক্রিম
বন আর অমলেট দিয়ে মেইক করা স্পেশাল
একটা
খাবার যেটা এই ব্রক্ষ্মান্ডে শুধু ইলিন
তৈরি
করতে পারে। "সি ইজ জিনিয়াস! "
স্মার্টকার্ড
পকেটে নিতে না নিতেই ইয়োটা
হাজির।
"হেই শাহরিয়ার, ইউর বাইক ইজ রেডী "
থ্যাংকস
এ লট ম্যান!
হেই,
ডোন্ট ফরগেট টু ব্রিং মাই চার্জার কেবল। -
ইয়োটা
বলল। ওর চার্জার কেবলটা গতকাল রাতে
জ্বলে
গেছে। ভোল্টেজ আপ-ডাউন!
"সিউর,
আই উন্ট।"- বলেই বাইকের হাতলে ফুল
গিয়ার
তুলল শাহরিয়ার, গন্তব্য স্টেট কলেজ অফ
রেড।
দুর্দান্ত
গতিতে মিনিট তি'নেকের মাঝেই
কলেজ
পৌঁছে গেল শাহরিয়ার।
শাহরিয়ার
কলেজে চলে যেতেই কাজের
বিরতি
পেল ওরা দুজন,
ব্রোমালিন
হাতে ইয়োটা আর ইলিন বসে গেল
লনের
মাঝে। গাণিতিক ভালোবাসার গল্প
চলতে
থাকল এই অবসরে। এক চুমুক ব্রোমালিন আর
অবাক
করা সব গল্প। কথার মাঝে মাঝ আকাশে
দেখতে
থাকা ইউফোর উড়াউড়ি। হাউ
রোমান্টিক!
দুপুরে
কলেজ থেকে যখন শাহরিয়ার ফিরে এল,
ঠিক তখন
থেকেই প্রচন্ড ফিভার শাহরিয়ারের।
ইলিন
সেই দুপুর থেকে শাহরিয়ারের দেখভাল
করে
যাচ্ছে।
ঘটর ঘট
শব্দ তুলে পায়চারি করে যাচ্ছে ইয়োটা,
মনে মনে
বলছে, "ইটস মাই মিইস্টেক " হ্যাড টু
কেয়ারফুল
আবাউট ইট "পুওর ল্যাড!
অন্যমনস্ক
হয়ে ঘুরতে থাকা ইয়োটাকে এসে এর
মাঝে
ইলিন বলে গেল, কল হিস প্যারেন্টস! নাউ
হি নিডস
দেম।
ইয়োটা
ফোন হাতে নেবে হঠাৎ কলিং বেল
বেজে
উঠল।
ইলিনের
যান্ত্রিক হাতে ফোন তুলে দিল
ইয়োটা,
ট্রাই দিস। অ্যাম গোয়িং টু চেক ইট।
আবার
বেল বাজল, এরপর বলল,
উফ, নাউ
হু?
বিরক্তি
টেনে দরজা খুলে দিল ইয়োটা।
লাল
চুলের এক যুবক। পরনে সিল্ক শার্ট, কালো
প্যান্ট।
চোখে হালকা কাঁচের গ্লাস।
ছ'ফুট
লম্বা যুবক।
"হাই,
অ্যাম মিখাইল। আ আ...ডু ইউ নো ক্লান ব্লু?
অ্যাম
ফ্রোম দেয়ার, ক্যান আই প্লিজ মিট
শাহরিয়ার?"
যুবক
কথা বলতে বলতে,
ইয়োটার
গোল মাথা এর মাঝে উপড়-নীচ করে
পুরো
বডি স্ক্যান করে ফেলেছে যুবকের।
(রিস্ক
নিয়ে কি হবে? কে কখন কি মতলবে আসে
বলা তো
যায় না!)
লাল
চুলের যুবক বলে যাচ্ছে, মে আই এন্টার?
ও... ও
সিউর, প্লিজ।
ভেতরে
এসেই সোফায় বসে গেল যুবক। বলল, ইটস
রিয়েলি
উইয়ার্ড! ফার্স্ট অব অল আমার কন্টাক্ট
করে আসা
উচিত ছিল। বাট, আই ডোন্ট হ্যাভ
এনাফ
টাইম! অ্যাম সরি ফর দ্যাট!
কফি অর
কোল্ড ড্রিংক? জানতে চাইল ইয়োটা
"নো
থ্যানক ইউ।" (বেশ ভদ্রভাবে জবাব
মিখাইলের) বাট হোয়ার ইজ হি?
ইয়োটা
বলল, "আনফরচুনেটলি! শাহরিয়ার ইজ
সিক। আই
ডোন্ট নো, হি কুড মিট ইউ ওর মেবী নট।"
মিখাইল,
কপাল ভাঁজ করে জানতে চাইল,
"হোয়াট
হ্যাপেন্ড? "
ইয়োটার
জবাব, "ফিভার! "
ওকে
দেন, আই'ইল কাম টুমোরো! (বলতে বলতে
উঠে
দাঁড়াল মিখাইল)
ঘরে
অপরিচিত গলা শুনে ড্রইং রুমে এল
শাহরিয়ার।
জিজ্ঞেস করল, হু?
গায়ে
চাঁদর টেনে নিল শাহরিয়ার। রীতিমত
কাঁপছে
সে।
হ্যালো
বলেই হাত এগিয়ে দিল মিখাইল,"
অ্যাম
মিখাইল, ফরম ক্লান ব্লু "
হাত
মেলাল শাহরিয়ার।
ফিভারের
ঊষ্ণতা ছুয়ে গেল মিখাইল কে।
হাতটা
বেশ ঊষ্ণ শাহরিয়ারের।
প্লিজ
সিট!
বলুন কি
হেল্প করতে পারি?
"অ্যাকচুয়ালি,
অ্যাম হেয়ার টু ক্লেইম মাই
ওউনারশিপ!"
"ওউনারশিপ?
ফর হোয়াট?" ভ্রু কুঁচকে বলল
শাহরিয়ার।
"ইলিন,
আউয়ার রোবোট! আমার বাসা থেকে
পালিয়ে
এসেছে। নেয়ার আব্যাউট ফোর ইয়ার্স
ব্যাক।
দেন সার্ভার থেকে ইনফো নিয়ে
আপনার
অ্যাড্রেস পেলাম। অলরেডি, আমি
ক্লান
ব্লু'য়ের থানায় মামলা করেছি।
হারানোর
তথ্য দিয়ে। ইজ সি উইথ ইউ?"
হাত
বাড়িয়ে কতগুলো কাগজের পাতা
শাহরিয়ার
কে দিল মিখাইল।
শাহরিয়ার
প্রচন্ড ফিভার নিয়ে বিস্ফোরিত
চোখে
কাগজের পাতা উল্টেপাল্টে যাচ্ছে।
মাথা
চক্কর খাচ্ছে ওর।
হঠাৎ
দুম করে সোফা থেকে পড়ে গেল
শাহরিয়ার।
এরপর আর কিছু মনে নেই।
জ্ঞান
ফিরে আসতেই চোখ মেলে মায়ের মুখ
দেখতে
পেল শাহরিয়ার।
আম্মু
বলেই কেঁদে ফেলল, একবার। কিছু হয়নি
বলেই
ছেলেকে জড়িয়ে ধরলেন মা।
"নো
টেনশন শাহরিয়ার! আই মেইড ইট ক্লিয়ার -
ধাতব
ঘটর ঘট শব্দ" -ইয়োটার গলা
মায়ের
কোল থেকে মাথা সরিয়ে দেখল
ইয়োটা
আর ইলিন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে।
হাত
ঘুরিয়ে ইয়োটা আবার বলল, "নেয়ার
অ্যাবাউট
১৯০ ভোল্ট দিয়েছি ওকে "
শাহরিয়ার
বলল, কিন্তু কেন? ও তো সত্যি
বলেছে।
ও তো
ইলিনের সেই মালিকের ছেলে। ফিরে
এসেই
নিজের দাবি ক্লেইম করেছে।
শাহরিয়ারের
আম্মু বাটি করে সুপ এনে মুখে
তুলে
দিচ্ছেন ছেলের।
এক
দু'বার মুখে তুলে আর খেতে পারল না
শাহরিয়ার।
সব খেতে তেতো লাগছে এখন।
ইয়োটা
মুখ ভার করে বলতে লাগল, "ওর খবর আছে,
এরপর আর
যাকে নিয়ে আসুক। আমি আমার
ভোল্টেজ
বাড়িয়ে দেব। "
শাহরিয়ারের
আম্মু, ছেলেকে সুপ খাওয়াচ্ছেন
আর এদের
কথা শুনে হেসে যাচ্ছেন।
শাহরিয়ার
বলল, ''ইয়ো, প্লিজ স্টপ ইট।
আই উইল
ডু হোয়াটেভার ইজ নেসেসারি।"
ইয়োটা
থামল এবার।
ইয়োটা-ইলিন
দুজনেই চলে গেল পাশের ঘরে।
শাহরিয়ারের
আম্মু বললেন, কি করে ফিভার
হলো?
গতকাল
এক্সাম ছিল আম্মু, তাছাড়া এয়ারকুলার
টা কাজ
করছিল না। তাই রাত জেগে এটা ঠিক
করছিলাম।
কেন?
এরা দুজন কি করছিল?
বাদ দাও
তো আম্মু।
কেন?
এরা তোকে কষ্ট দিয়ে ফিভারে ফেলবে
আর তুই
এদেরকে একসাথে রাখবি?
ওই যে
মিখাইল না কে এসেছিল দিয়ে দে। পরে
আবার
বিপদে না পড়িস!
"আম্মু,
প্লিজ নো টেনশন! আই'ইল ম্যানেজ ইট।
ডোন্ট
ওরি না! "
দিন'তিনেক
কেটে গেছে।
অবশ্য
এর মাঝে মিখাইল একবার এসেছিল।
শাহরিয়ার
অসুস্থ বলে পুলিশের ঝামেলায়
যায়নি।
এদিকে
ওর ফিভার টাও কমে এসেছে আজ।
শাহরিয়ার
তৎপর না হলেও ইলিনের ব্যাপারে
ইয়োটা
যথেষ্ট তৎপর! ইতিমধ্যে ক্লান ব্লু এর
ডাটা
সার্ভার ডাউন করে দিয়েছে। সিস্টেমে
ভাইরাস
ইনপুট করে সার্চ ইঞ্জিনে পপ আপ
আড্রেস
চালু করেছে। তাই সেখানকার ক্লানের
ডাটা
সার্ভার স্লো আর ডাউন হয়ে আছে। এক
এড্রেস
বারে ক্লিক করলে যাচ্ছে অন্য
অ্যাড্রেস
বারে।
কিন্তু
এটা কে বা কারা সেটা করছে সেটা
কেউ
বুঝতে পারছে না।
ক্লান ব্লু'য়ের আইটি স্পেশালিষ্টদের মাথা
গরম এই
নিয়ে।
শাহরিয়ার
আজ অনেকটা সুস্থ।
পায়ে
হেটে নিজের স্টাডি রুমে এসেছে। আম্মু
চলে
গেছে সকালে। তাই আবার কুকিং এ
ব্যাস্ত
ইলিন।
স্টাডি
রুমে এসেই দেখতে পেল কি সব নিয়ে
ব্যাস্ত
ইয়োটা। যাকে ডেকে মাঝে মাঝেই
পাওয়া
যায় না।
বিস্মিত
হয়ে শাহরিয়ার জানতে চাইল,
"হোয়াট
আর ইউ ডুয়িং ম্যান? পুলিশ আরেস্ট
করবে
সাইবার ক্রাইমের আইনে "
ইয়োটা
থামছে না দেখে, শাহরিয়ার থামাতে
গেল।
ডোন্ট
ডিস্টার্ব মি! প্লিজ! ধাক্কা দিল
ইয়োটা
আতঁকে
গেল শাহরিয়ার। পড়া থেকে উঠে
দাঁড়াল
শাহরিয়ার। বলল, ওকে।
ইলিন
আড়াল থেকে দেখল এ ঘটনা। সামনে এসে
বলল,
অ্যাম লিভিং নাউ!
ইয়োটা
বলল, হোয়াট? বাট হোয়াই?
ইউ
জাস্ট ডিসগ্রেস আউয়ার মাস্টার! জোর
আওয়াজে
বলল ইলিন।
শান্ত
হয়ে গেল পুরো ঘর। একটু এগিয়ে এসে
ইয়োটা
শাহরিয়ার কে বলল, "আই অ্যাম সরি, আই
উন্ট ডু
ইট এগেইন "
শাহরিয়ার
বলল, "ওকে ম্যান। আই
আন্ডারস্ট্যান্ড
ইউর ফিলিংস! উয়ি উইল সলভ ইট।
"
বিকেলে
অর্থি এলো, অর্থি আবার কে প্রশ্ন
করতে
যাবেন না প্লিজ। পাশের বাসার
মেয়েটি
অর্থি।
চারজনে
মিলে প্লান করা হলো।
"মিশন
সেইভ ইলিন।"
অর্থির
ড্রোনকে পাঠানো হলো মিখাইলের
বাসায়।
কি করে মিখাইল কে মালিক হিসেবে
অযোগ্য
বিবেচনা করা যায় সেই আইডিয়া।
সার্ভার
থেকে ডেটা প্রিন্ট করে কাজে
নেমে
শাহরিয়ার আর অর্থি।
এর মাঝে
ইলিনকে নিয়ে গেল মিখাইল। পুলিশ
এসে
নিয়ে গেছে ইলিন কে। ইয়োটা অনেক
ঝামেলা
করছিল। তাই অর্থি ইয়োটার ব্যাটারি
ডাউন
করে রেখেছে। না করলে বেচারা কি যে
করতে কে
জানে?
সাতদিন
ট্রাই করেও কোন কূল-কিনারা করা
গেল না।
মুষরে
পড়লো শাহরিয়ার। "হোয়াট শুড আই ডু?
"
অর্থি
বলল, প্লিজ, আমাদের ট্রাই করতে হবে।
কি করব
বলো? শাহরিয়ার কপালে হাত রাখল।
ইয়োটার ব্যাটারি ডাউন করে রেখেছি।
স্ট্যান্ডবাই
থাকলে ওকে কে সামলাতো? বলল
অর্থি।
হঠাৎ
অর্থি বলল,
হেই,
এমন যদি হয়। যদি মিখাইল মৃত ব্যাক্তির
ছেলে না
হয়!
লেটস
চেক ইট!! পিসিতে বসে গেল ওরা দুজন।
ইয়েস,
পেয়েছি!
ইনফো
পেল অর্থি, ইলিন কে যে এনেছিল সে
দুটি
বিয়ে করে। এই মিখাইল তার প্রকৃত ছেলে
নয়।
মিখাইলকে ছোট থাকা অবস্থায় সে
মিখাইলের
আম্মুকে বিয়ে করে। আইনত সে তার
পিতা
কিন্তু প্রকৃত পিতা নয়।"
শাহরিয়ার
হেসে ফেলল, লেটস ডু ইট ডিয়ার!
অর্থি
বলল, "মিখাইল কে ডি এন এ চ্যালেঞ্জ
করব
আমরা! জানো তো বাবার সাথে ডি এন এ
ম্যাচ
না করলে তার প্রোপার্টির কিছু পায়না
তার
সন্তান! রিমেম্বার? "
শাহরিয়ার
দ্রুত ফোন তুলে নিল। ইলিনের ভেন্ডর
কোম্পানীকে
ফোন করল। তারাও এগ্রি
চ্যালেঞ্জের
ব্যাপারে।
কিন্তু
যদি শাহরিয়ার এই চ্যালেঞ্জ জিতে যায়
তবে
ইলিন কে কি করে পাবে?
ভেন্ডর
টিম তো অন্য কাউকে দিয়ে দেবে
সেটা!
অর্থি
বলল, আগে তো আমরা ইলিনকে
মিখাইলের
হাত থেকে বাঁচাই!
পরের
সপ্তাহে, আদালতে গেল চ্যালেঞ্জ।
হ্যা,
আদালতে প্রমাণ হলো, হেরেডিটি স্বত্ব
ভংগ
করায় মিখাইলকে জরিমানা এবং একই
ভেন্ডর
থেকে ভবিষ্যতে কোন রোবট ধার দেয়া
হবে না।
জোর করে পিতার প্রোপার্টি নিজের
নামে
করায় জরিমানা করা হল তাকে।
আর
সেদিনই ইলিনকে নিয়ে গেল ভেন্ডর
প্রতিষ্ঠান।
মিখাইল,
শাহরিয়ার কে বলল, সিরিয়াসলি ইউ
মেইড এ
বিগ মেইস্টেক ম্যান "
শাহরিয়ার
জবাব দিল, " হোপ ইউ ডোন্ট নো,
অ্যাকচুয়ালি,
আই লাভ সাচ থিং "
বাসায়
এসে গম্ভীর মুখে শাহরিয়ার। চার্জ
দিয়েছে
ইয়োটার কেবলে।
অন হয়েই
কি না কি বলে। ইলিনকে সে ভেন্ডর
কোম্পানি
দেয়নি। শাহরিয়ার চেয়েছিল।
আপ্লিকেশন
ও দিয়েছিল। বাট রিজেক্টেড!
অন হয়েই
ঘটর ঘট শব্দ তুলে ঘরে এলো ইয়োটা।
হোয়ার
ইজ ইলিন?
শাহরিয়ার
চুপ। কোন কথা বলছে না।
ইয়োটা
বলল, "প্লিজ, আই নিড অ্যান্সার "
কলিং
বেলের শব্দ শুনল এরা দুজন, কেউ এসেছে
শাহরিয়ার
দরজা খুলতে চলে গেল।
অর্থি
এসেছে, কিন্তু ওর পেছনে কে?
যান্ত্রিক
শব্দের চিৎকার, "ইলিনন ন ন.........."
ইলিনকে
নিজের আড়ালে লুকিয়ে এনেছে অর্থি।
শাহরিয়ারের
চোখে ধরা না পড়লেও ইয়োটার
স্ক্যানার
দেখেছে ইলিনকে
"উফ!
লুকিয়ে রাখতে পারলাম না, ধরে ফেলল! "-
অর্থি
বলল।
শাহরিয়ার
হেসে বলল," ইউ নো! দিস ইজ
ইয়োটা!"
অর্থি
হালকা গলা ঝেড়ে বলল, এহেম এহেম!
হ্যালো
বাডিস!! মিট মাই নিউ ফ্রেন্ড ইলিন।
শাহরিয়ার
অর্থির কাছে এসে বলল, থ্যাংক ইউ
ডিয়ার!
অর্থি
বলল, থ্যাংকু ডিয়ার টু । নাউ জাস্ট,
ইয়োটা
এন্ড ইলিন।
শাহরিয়ার
বলল, একটু গাণিতিক ভুল বললে, এরা
"ইয়ো-লিন
"
হেসে
দিল অর্থি।
লাল-সবুজ
বাতি জ্বালাচ্ছে ওরা দুজন।
হাত
বাড়িয়ে অর্থি কাগজটা এগিয়ে দেয়
শাহরিয়ারের
হাতে
"নেইম
: ইলিন
হেইট :
৫,৫'
কালার :
হোয়াইট
স্ট্যান্ডবাই
টাইম : ২৪৬ ডে ৬২ আওয়ার
রিচার্জয়েবল
ব্যাটারি। ২২২২২২৬৪ লিথিয়াম
আয়ন
ওয়াটারপ্রুফ।
ল্যাংগুয়েজ
আক্সেস : ভারিয়েবল
ওউনার :
অর্থি হাসান
সাবক্লান
: রেড
ক্লান :
বাংলাদেশ
(সমাপ্ত)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন