এলিয়েন আসলে কি?
ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েন ( Aliens) বলতে পৃথিবী
-ভিন্ন মহাকাশের অন্য কোনো স্থানের প্রাণকে বোঝায়। অনেকেই ভিনগ্রহের প্রাণী বলতে
মানুষের আকৃতির প্রাণী বুঝে থাকলেও বস্তুত যেকোনো ধরণের প্রাণীই এতালিকায় ধর্তব্য
হতে পারে- এধারণায় পৃথিবী-ভিন্ন অন্য জগতের একটা সূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়াও ভিনগ্রহের
প্রাণী হতে পারে। ইংরেজি aliens শব্দটি অনাকাঙ্ক্ষিত বা অনাহুত কিংবা অপরিচিত
আগন্তুককে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
এলিয়েন
বলতে আমরা এক বাক্যে যা জানি তা হলো, ‘এটি ভিনগ্রহের প্রাণী’। অর্থাৎ পৃথিবীর
বাইরের ভিন্ন মহাকাশের কোনো স্থানের প্রাণকে বোঝায়। প্রাণী বলতেই বোঝায় যাদের
প্রাণ আছে। সে হিসেবে ভিনগ্রহের একটি সূক্ষ্ণ ব্যাকটেরিয়া ও ভিনগ্রহের প্রাণী। তবে
ব্যাকটেরিয়া এলিয়েন নয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে এলিয়েনের সজ্ঞা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে
এই বিষয়টিও একইসাথে স্বীকার করতে হবে যে, পৃথিবী ছাড়াও আরও যে অন্য গ্রহগুলো রয়েছে
সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে। সেখানে থাকতে পারে বসবাসের পরিবেশ। কেননা
এখনো মহাকাশের অনেক গ্রহ আমাদের কাছে অজানা। হয়তোবা সেই অজানা গ্রহেই বাস করে এই
এলিয়েনেরা– এরকমই বিশ্বাস করে বেশিরভাগ মানুষ।
ইউএফও কি ?
ইউএফও
(U.F.O) এর ফুল ফর্ম হচ্ছে –Unidentified Flying
Object। অনেকে অবশ্য ফ্লাইং সসার ও বলে থাকেন। ফ্লাইং সসার বলার কারন
হচ্ছে- অধিকাংশ ইউএফও, যা দেখা গেছে বলে দাবী করা হয়, তা অনেকটা সসার বা পিরিচ
আকৃতির। তবে ইউএফও যে শুধুই সসার আকৃতির, তা কিন্তু নয়। অনেক ইউএফও গোলক, অনেক
গুলো সিগার আকৃতির, আবার কেউ কেউ বলে পিরামিড এর মতো ইউএফও ও নাকি দেখেছেন তারা।
ইউএফও এর অস্তিত্ব কি আসলেই আছে নাকি এটি মানব মস্তিস্কের উর্বর কল্পনা? মানুষ কল্পনাপ্রবন,
একথা মিথ্যা নয়। তবে ইউ এফ ও পুরোটাই মানুষের কল্পনা প্রসুত জিনিস, এটা বলাটা বোধ
হয় অনেক কঠিন। ইউএফও দর্শনের কমপক্ষে হাজারখানেক, বা তার ও বেশি দাবী ব্যাপারটাকে
অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত করে গেছে দিনের পর দিন। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন
সময়ে দেখা যাওয়া এই বস্তুরা তাই অবলোকনকারীদের মনে বদ্ধমুল ধারনা জন্মিয়েই ফেলেছে
যে পৃথিবীর বাইরে অবশ্যই প্রানের অস্তিত্ব আছে এবং তারা বেশ বুদ্ধিমান।
ইউএফও দর্শনের প্রথম ঘটনা
প্রাচীন
মিশরের অনেক লিপিতেই এই উড়ন্ত চাকতির উল্লেখ আছে। তাদের মধ্যে একটি বেশ
উল্লেখযোগ্য, সেটি হচ্ছে মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের তৃতীয় ফারাও টুথমোজ এর একটি লিপি।
ফারাও শীতের তৃতীয় মাস, এবং দিবসের ষষ্ঠ ঘণ্টায় আকাশে কিছু অদ্ভুত দর্শনের উড়ন্ত
অগ্নি গোলক দেখতে পান বলে তা লিপিবদ্ধ করে রাখার নির্দেশ দেন। এটি খ্রিস্টের
জন্মের ও প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বের ইতিহাস।এর পরেও বহুবার ইউএফও এর দর্শনের কথা
শোনা যায়। তবে বর্তমান পৃথিবীর ইতিহাস অনুসারে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ইউএফও দর্শন এর
তারিখ ১৫৬১ সালের ১৪ ই এপ্রিল। স্থান-নুরেমবারগ, জার্মানি।
এলিয়েন রহস্য
এলিয়েন
রহস্য জানার জন্য মানুষ হাজার হাজার বছর চেষ্টা করেছে কিন্তু এখনো কোন সিদ্ধান্তে
পৌছাতে পারেনি। হয়তো আরও হাজার বছর লাগবে। অথবা এই রহস্য কোনদিনও ভেদ হবেনা। এটা
নিয়ে জল্পনা কল্পনার তাই আর শেষ নেই। তবে এই রহস্য আরও ঘনীভূত করেছে যে বস্তু তার
নাম ইউএফও (U.f.o)। পৃথিবীর আকাশে মাঝে মাঝেই দেখতে পাওয়া উড়ন্ত এই অদ্ভুত বস্তু এর
ব্যাখাও মানুষের কাছে অধরা। এই গোলাকার ও নীল গ্রহটিতেই কি শুধু আমরা একা বাস করি?
এই প্রজন্মের জনপ্রিয় পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস মনে করেন, খুব সম্ভবত ‘না’। এর
পেছনে চিরসত্য কারণটি হচ্ছে মহাবিশ্ব অনেক বড়। সত্যিকার অর্থেই বড়। যুগের পর যুগ
ধরে মানুষের কৌতূহলী মনে জন্ম নেয়া একটি রহস্যময় প্রশ্নের উত্তর আমরা আজো কেউ জানতে
পারিনি। সেটি হচ্ছে এলিয়েনের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন। আমাদের পৃথিবী গ্রহ হচ্ছে
সূর্যের চার পাশে অবর্তনকারী আটটির মধ্যে একটি এবং প্রায় ২০০ বিলিয়ন নত্রের মধ্যে
অবস্থানকারী অনেক বিশেষ একটা জায়গা। এই বিশাল সংখ্যক নত্র নিয়ে গঠিত হয়েছে আমাদের
ছায়াপথ যেটাকে আমরা মিল্কিওয়ে বলে থাকি। কিন্তু এমনকি আমাদের এই মিল্কিওয়েও এরকম
প্রায় ১০০ বিলিয়ন গালাক্সির মধ্যে একটি, যেন এক মহাসমুদ্রের মাঝে এক ফোটা জল। এই
বিশালত্বকে গভীরভাবে উপলব্ধি করলে আমারও এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে এই মহাবিশ্বে
কেবল আমরা একা। অন্য দিকে এটিও একটি যৌক্তিক প্রশ্ন যে যদি এলিয়েনের অস্তিত্ব থেকেই
থাকে তাহলে তারা কি আমাদের চেয়েও বুদ্ধিমান? তবে আমাদের ধারণাতেও এক জায়গায় সীমাবদ্ধতা
আছে এবং সেটা আরো মজার। কারণ, কে জানে হয়তো ভিনগ্রহের এলিয়েনরা অন্য কোনো অপরিচিত
জৈবিক পদার্থ দিয়ে তৈরি জীব যেটা হয়তো মানবসভ্যতা কোনো দিন একটি জীব হিসেবেও
কল্পনাও করতে পারবে না। আবার হয়তো এই প্রজাতিগুলো কোনো অতিপ্রাকৃতিক রাসায়নিক
উপাদান দিয়ে সৃষ্ট যেগুলো নত্রের ঠিক কেন্দ্রস্থলে জীবনধারণ করার মতো রাখে। আমাদের
গ্যালাক্সিতেই রয়েছে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র যার মধ্যে আমাদের
সূর্য্যও একটি। এ বিশাল মহাবিশ্বে সূর্য্যের মত রয়েছে অসংখ্য নক্ষত্র। তাদের
কোনটিতে আমাদের সৌরব্যবস্থার মত ব্যবস্থা থাকতেই পারে যেখানে থাকতে পারে প্রাণী। মহাবিশ্ব
অনেক বড় হবার কারণেই স্টিফেন হকিং এবং কার্ল সেগান এর মতে প্রথিবীর বাইরে প্রাণ
থাকার সম্ভাবনাটাও বেশী। অনেকে প্রথিবীর বাইরে প্রাণের প্রমাণের জন্য বিভিন্ন
সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যাওয়া UFO(=Un-identified Flying Object=অচেনা
উড়ন্ত বস্তু) ’র কথা বলেন। তবে বেশিরভাগ UFO কেই পৃথিবীসৃষ্ট আকাশযান অথবা কোন
মহাজাগতিক বস্তু বা দেখার ভুল হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়। এছাড়াও আর্জেন্টিনার
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সাগরপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৭০০ মিটার (১৫হাজার ৪০০ ফুট) উপরে লেক
ডায়মান্ট নামক হ্রদে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এ আবিষ্কার থেকে ভিনগ্রহে প্রাণের
ব্যাপারে সূত্র পাওয়া যেতে পারে।কেননা হ্রদটির কাছেই রয়েছে মাইপো আগ্নেয়গিরি।
এখানে কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের প্রকট অভাবেও বেঁচে আছে। এর আগে বিরুপ
পারবেশে টিকে থাকা ‘এক্সট্রিমোফিলস’ নামক ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু ‘পলিএক্সট্রিমোফিলস’
নামক ব্যাকটেরিয়া চরম বৈরি পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম। ওই হ্রদে আর্সেনিকের নিরাপদ
মাত্রার চেয়ে ২০ হাজার গুণ বেশি মাত্রা রয়েছে। তাপমাত্রা প্রায়ই শূণ্যের নিচে
নামে। কিন্তু অতিরিক্ত লবণক্ততার কারণে বরফ জমাট বাঁধেনা। এ আবিষ্কার নিঃসন্দেহে
ভিনগ্রহের বৈরি পরিবেশেও প্রাণের অস্তিত্তের পক্ষে রায় দেয় অস্তিত্ব ।
তাহলে প্রশ্ন
হলো এই অসীম সম্ভাবনার অতি বৃহৎ মহাবিশ্বের কোনো জায়গায় এবং কিভাবে ভিনগ্রহের
প্রাণীদের শনাক্ত করা যেতে পারে? এর উত্তর জানার জন্য আমাদের এই পৃথিবীর দিকে ফিরে
দেখতে হবে। আমরা দেখতে পাই যে, জীবের জীবনধারণের মৌলিক উপাদানের মধ্যে পানি অন্যতম।
পানির পাশাপাশি কার্বন ও একটি শক্তির উৎস দরকার। যেহেতু পানি আমাদের অতি পরিচিত পদার্থ
তাই মহাশূন্যের কোথাও পানির উপস্থিতি থাকলে সেটা আমাদের খুঁজে বের করা সহজ হবে।
সবচেয়ে
আশাব্যঞ্জক ব্যাপার হচ্ছে বিজ্ঞানীরা আমাদের গ্রহের বাইরে মহাশূন্যেও পানির
অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। মঙ্গল আমাদের অতি সুপরিচিত গ্রহের মধ্যে একটি। ৭০-এর দশক থেকেই
মঙ্গলে রোবটের পদচারণা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি নাসার স্প্রিট রোভার মঙ্গল থেকে যেই ছবিগুলো
তুলেছে সেগুলো সত্যিই অবিশ্বাস্য। চিত্রগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, সেখানে কোনো
এক সময় পানির প্রবাহ ছিল। তা ছাড়া মঙ্গলের ভূমির গভীরে আর্দ্রতা বিদ্যমান আছে। যদি
আর্দ্রতাই থাকে তাহলে হয়তো জীবের অস্তিত্বও বিদ্যমান থাকতে পারে।
এবার
কোনো গ্রহ নয়, ঘুরে আশা যাক মহাশূন্যের এক রহস্যময় উপগ্রহ ইউরোপা থেকে, যেটা
মঙ্গলের আরো ৩০ মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থান করছে এবং জুপিটারকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
ইউরোপা ২০০০ মাইল ব্যাসযুক্ত খুবই ছোট একটা উপগ্রহ। এটা অত্যন্ত শীতল এবং
তাপমাত্রা প্রায় মাইনাস ২৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরো ইউরোপাটিই বরফে আচ্ছাদিত এবং
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন বরফের আস্তরণটি প্রায় ১৫ মাইল গভীর। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও
সত্য যে, এই ইউরোপার বরফ আস্তরণের তলদেশে কোথাও হয়তো গরম তাপমাত্রার প্রবাহ
বিদ্যমান থাকতে পারে। যদি এমনটিই হয় তাহলে সেই তাপমাত্রা তলদেশের বরফ গলিয়ে তরল
পানিতে পরিণত করার মতো মতা রাখে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে কোনো জলজ প্রাণী থাকতে
পারে এমন ধারণা করাটাও খুব বোকামি হবে না। হয়তো তারা আমাদের পৃথিবীর সাগরের নিচে
বসবাসকারী অন্য কয়েকটি প্রাণীর মতো স্বাভাবিক সাঁতার কাটে। বলছিলাম, আমাদের গ্রহের
বাইরে অন্য কোথাও বিদ্যমান থাকা পানিতে বসবাসকারী প্রজাতির কথা। কিন্তু পানি ছাড়াও
নাইট্রোজেন হচ্ছে আরেকটি সম্ভাব্য উপাদান, যেখানে জীবের অস্তিত্ব থাকতে পারে।
স্বাভাবিকভাবে নাইট্রোজেনকে আমরা গ্যাসীয় অবস্থায় দেখতে পারলেও অতি Low তাপে,
প্রায় মাইনাস ৩২০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে এটি তরল পদার্থে পরিণত হয়। এরকম নাইট্রোজেন
গ্যাসে পরিপূর্ণ সৌরজগতের দু’টি গ্রহ হচ্ছে জুপিটার ও স্যাটার্ন। হতে পারে সেখানে
এমন কোনো প্রজাতি আছে যারা গ্যাস দিয়ে তৈরি।
জীব মানে
খাবারের ওপর নির্ভরশীল। বিজ্ঞানীদের ধারণা এরকম গ্যাস দিয়ে তৈরি জীবেরা অনেক সময়
খাবার হিসেবে বজ্রপাতের ফলে সৃষ্ট বিজলির আলোকেও কাজে লাগাতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো
এসব এলিয়েনরাও কী আমাদের মতো উন্নত মস্তিষ্কের অধিকারী? যদি সত্যিকার অর্থেই এই
বিপুল গ্রহের কোনো একটিতে প্রাণীর বসবাস থাকে তাহলে কেউ না কেউ হয়তো আমাদের ব্যাপারেও
জানতে আগ্রহী। অনেকের বিশ্বাস এলিয়েনরা ইতোমধ্যে আমাদের পৃথিবী আবিষ্কার করেছে
অথবা খুব কাছ থেকে অবলোকন করে গেছে। এসব ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক সত্যতা পাওয়া যায়নি
একটি মাত্র ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ছাড়া।
ঘটনাটি
ঘটেছিল ১৯৭৭ সালের ১৬ আগস্টে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও অঙ্গরাজ্যে গবেষণার
কাজে স্থাপিত একটি রেডিও টেলিস্কোপ মহাশূন্য থেকে ধারণ করে ইতিহাসের আলোড়ন
সৃষ্টিকারী একটি সিগনাল। সিগনালটি ছিল দু’টি সংখ্যা ও চারটি বর্ণমালা নিয়ে গঠিত এক
ধরনের রেডিও ওয়েভ।
সঙ্কেতটিকে
শব্দে রূপান্তর করলে হয় ওয়াও - WOW! এই ওয়াও সিগনালটি এসেছিল ২০০ আলোকবর্ষ দূরের কোনো
স্থান থেকে যেটি পৃথিবীতে পৌঁছতে আনুমানিক ২০০ বছর সময় লেগেছে। আর আমরা যদি সেই
সিগনালের একটি উত্তর পাঠাতে যাই সেটাও সেখানে পৌঁছতে আরো ২০০ বছর লাগবে। ৭২ সেকেন্ডের
দীর্ঘস্থায়ী সেই ওয়াও সঙ্কেতটি আর কখনো শোনা যায়নি। এরকম আরো অনেক অবাক
তবে সেই বড়
প্রশ্নের উত্তরটি এখনো অজানা।
ভিনগ্রহের
প্রাণী কি সত্যি আছে?
এলিয়েন
আছে এমন ২০ গ্রহে চোখ রাখল নাসা। এলিয়েনদের নিয়ে মানুষের মনে কৌতুহলের শেষ নেই।
বহুবছর ধরেই এ নিয়ে গবেষনা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার নাসার কেপলার টেলিস্কোপে
চোখ রেখে প্রাণ থাকতে পারে এমন ২০টি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন নাসার গবেষকেরা। ওই
গ্রহগুলোও পৃথিবীর মত সূর্যের চারপাশে ঘোরে বলে দাবি করেছেন তারা। জানা গেছে,
কয়েকটি গ্রহ নিজের চারপাশে ঘুরতে পৃথিবীর হিসেবে ১৮দিন সময় নেয়। এর মধ্যে রয়েছে
এমন একটি গ্রহ, যে নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরতে সময় নেয় ৩৯৫ দিন। এতে সবথেকে বেশি
প্রাণ থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি নাসার K2 অভিযানের অংশ ছিল।
KOI-7923.01 নামের একটি
গ্রহ আকারে পৃথিবীর তুলনায় ৯৭ শতাংশ বড়। এটি আমাদের পৃথিবীর
তুলনায় কিছুটা ঠাণ্ডা। কারণ নক্ষত্র থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে। নক্ষত্রটিও সূর্যের
তুলনায় ঠাণ্ডা। অর্থাৎ পৃথিবীর তুন্দ্রা অঞ্চলের মত আবহাওয়া এই গ্রহে। তবে সেখানে
পানি আছে কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
গবেষকদের
এই টিম ৭০-৮০ শতাংশ নিশ্চিত যে, এই গ্রহগুলোতেই প্রাণের আশা থাকতে পারে। তবে আরও
অনেক পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
শুক্র
গ্রহে এলিয়েন নগরী! এলিয়েনরা এবার ঘর বেঁধেছে শুক্র গ্রহে! অন্তত ইউএফও
(আইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট) হান্টারের চোখে তাই ধরা পড়লো। শুক্র গ্রহের মাটিতে দালানের
মতো যে কাঠামো ও উপকরণগুলোকে এলিয়েনদের নগরী বলে ধারণা করছেন একজন গবেষক। তিনি
বলেন, দালানগুলো হয়তো কোনো এলিয়েনের তৈরি। মঙ্গল গ্রহ বিষয়ক গবেষকরাও জানান এই
কাঠামোগুলোকে দেখতে প্রাকৃতিক বলে মনে হচ্ছে না, এলিয়েনদের কোনো সম্প্রদায় হয়তো মঙ্গলের
পর বসবাসের দ্বিতীয় গ্রহ হিসেবে শুক্র গ্রহকে বেছে নিয়েছে। ছবিগুলো পাওয়া গেছে
মেগাল্লান স্পেসক্রাফটের মাধ্যমে। শুক্রের রাডার ম্যাপার হিসেবে পরিচিত
মেগাল্লানকে ১৯৮৯ সালের মে মাসে শুক্র গ্রহে পাঠানো হয়।
মেগাল্লানের
অভিযানের অংশ হিসেবে রয়েছে শুক্র গ্রহের ভূমির ধরন ও টেকটনিক, ক্ষয়, চ্যুতি,
রাসায়নিক প্রক্রিয়া ও গ্রহের অভ্যন্তরভাগের অবস্থা শণাক্তকরণ। ইউটিউব ও এলিয়েন
হান্টার মান্ডোডেস্কোনোসাইডো (mundodesconocido)
একযোগে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, শুক্রের ছবিগুলো
বিশ্লেষণ করতে করতে বৃহদাকার এ শহরগুলোকে চিহ্নিত করা গেছে। অবকাঠামোগুলোর স্বরূপ
ত্রিমাত্রিক মডেলও তৈরি করা হয়েছে। জানা যায়, কৃত্রিম অদ্ভুত গড়নের আকৃতিগুলো
নগরীর কাঠামোর মতো এবং এখানে এমন কিছু উপাদানও রয়েছে যা থেকে আলো নির্গত হচ্ছে।
এগুলো এলিয়েনদের অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স বা ভূ-পৃষ্ঠে আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ যেকোনোটাই
হতে পারে। এ গ্রহের অন্তত ৮৫ শতাংশ পৃষ্ঠজুড়ে আগ্নেয় প্রবাহ দেখা গেছে। এগুলোকেই হয়তো
ইউটিউবে প্রকাশিত ভেনাসের ‘হিউজ সিটি’ ক্লিপের এলিয়েনের নগর কাঠামো বলেও অনেকের অভিমত।
আমেরিকান
চিত্রশিল্পী ও প্রোডাকশন ডিজাইনার স্কট সি. শুক্র গ্রহের এ ইউটিউব ভিডিওটি নিজের
ব্লগে শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, গবেষক কেবল এই কাঠামোগুলোই আবিষ্কার করেননি, এর
সিজিআই (কম্পিউটার জেনারেটেড ইমেজারি) তৈরি করেছেন, যাতে আমরা বুঝতে পারি এগুলো
বাস্তবিক অর্থে দেখতে কেমন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, সমগ্র শুক্র গ্রহই এমন কাঠামো
দ্বারা পরিপূর্ণ।
এলিয়েনের
আগমন, তাদের বুদ্ধিমত্তা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল জ্ঞানের (!) উপর অসংখ্য বই
লিখা হয়েছে। কয়েকটার নাম। বিস্তারিত জানার জন্য এই বইগুলো পড়তে পারেন।
1. ‘The great idol
of tiahuanko ‘ by P.ALLAN and
H.S.BELAMI
2. ‘Companion along
the way’ by Mrs RUTH
3. ‘ The secret
doctrin ‘ by MOTHER BLATATOSKI
ভিনগ্রহে আসলেই প্রাণীরা আছে কি নেই এ ব্যাপারে ড্রেকের
সমীকরণ উল্লেখযোগ্য:
N = R × P × E × L × I × T এখানে, N = এই মুহূর্তে যে কয়টি
বুদ্ধিমান প্রাণীর জগৎ থেকে মানুষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে তার সংখ্যা R = নক্ষত্রমণ্ডলে
(galaxy) নক্ষত্রের (stars) সংখ্যা
P = একটা নক্ষত্রকে ঘিরে গ্রহ পাবার সম্ভাবনা
E = এরকম গ্রহ থাকলে
প্রাণের বিকাশোপযোগী গ্রহের সংখ্যা
L = প্রাণ
বিকাশোপযোগী গ্রহ থাকলে সত্যি সত্যি প্রাণের বিকাশ হবার সম্ভাবনা I = সত্যি সত্যি প্রাণের বিকাশ হলে সেগুলো বিবর্তনের ধারায় অন্য জগতের
প্রাণীর সাথে যোগাযোগের মতো বুদ্ধিমত্তা অর্জনের সম্ভাবনা T = যে সময় পর্যন্ত সেই
বুদ্ধিমান প্রাণী টিকে থাকতে পারে।
ড্রেকের এই
সমীকরণ দেখে বিখ্যাত বিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মি একটি হেঁয়ালী বলেন, যা ফার্মির
হেঁয়ালি নামে সমধিক পরিচিত। ফার্মির হেঁয়ালি মতে,
ক. সত্যি যদি মহাবিশ্বে বুদ্ধিমান প্রাণী থাকতো তাহলে
এতোদিনে তাদের দেখা পাওয়ার কথা
খ. পৃথিবীতে যদি তাদের দেখা না পাওয়া যায় তাহলে বুঝে
নিতে হয় মহাকাশযান তৈরি করে পৃথিবীতে আসার ব্যাপারে তাদের গরজ নেই।
গ. তা যদি সত্যি না হয় তাহলে বুঝতে হবে ঐ বুদ্ধিমান
প্রাণীর সভ্যতা খুব ক্ষণস্থায়ী; তাদের জন্ম হয় এবং কিছু বোঝার আগেই তারা নিজেরা
নিজেদের ধ্বংস করে ফেলে।
ভিনগ্রহের প্রাণী সম্পর্কে এখনও বিজ্ঞান কোনো সিদ্ধান্ত
না জানালেও অনেকেই পৃথিবীতে তাদেরকে দেখার দাবি করেছেন এবং পৃথিবীর একটা বৃহত্তর
অংশের মানুষ বিশ্বাস করে যে, ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব রয়েছে।
ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্পর্কে আংকিক কিংবা যৌক্তিক কিংবা
বিশ্বাসগত এই বিপুল সমর্থনের কারণেই তাই স্বভাবতই গবেষকরা খুঁজে চলেছেন এরকম কোনো
প্রাণের। এই সন্ধান-কার্যক্রমে গবেষকরা একদিকে অতীতের ঐতিহাসিক উৎসে খোঁজ করছেন
ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব আর বিজ্ঞানীরা খোঁজ করছেন পৃথিবীর বাইরের গ্রহ কিংবা
উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব।
ঐতিহাসিক
উৎস
যেহেতু অনেকেই দাবি করেন ভিনগ্রহের প্রাণীরা পৃথিবীতে
প্রায় নিয়মিত যাওয়া-আসা করে এবং তাদের দেখাও পাওয়া গেছে, তাই এটা অসম্ভব নয় যে,
পৃথিবীর আদি বাসিন্দারাও ভিনগ্রহের প্রাণী দেখেছেন। তাই ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্বের
প্রমাণ জোগাড়ে গবেষকরা ব্রতী হয়েছেন ঐতিহাসিক উৎসে ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধানে।
ঐতিহাসিক উৎসে ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাড়া জাগানো ব্যক্তিত্ব
হলেন এরিক ভন দানিকেন । তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে প্রাচীন পান্ডুলিপি
আর দেয়াল-চিত্র কিংবা দেয়াল- লিখনে খুঁজে দেখেছেন এলিয়েনদের পৃথিবীতে আসার নানা
প্রামাণিক দলিল। যদিও তাঁর এসব দৃষ্টিকোণের ব্যাপারে অনেকের আপত্তি রয়েছে।
অত্যাধুনিক উৎস
ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধানে পৃথিবীতে এবং পৃথিবী থেকে
পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন অভিযান। পৃথিবীর অভিযানগুলোর মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো সেটি (SETI: Search for Extraterrestrial Intelligence), যা ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে
প্রতিষ্ঠা করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক। 'সেটি' বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে ভিনগ্রহের
প্রাণীর সন্ধান করে পৃথিবী থেকেই। বর্তমানে ১০টিরও বেশি দেশে 'সেটি' এ কার্যক্রম
পরিচালনা করছে।
উপগ্রহ
গ্রহে প্রাণ
আমাদের সৌরজগতের মঙ্গল গ্রহের অবস্থান, সূর্যের দিক থেকে
পৃথিবীর ঠিক পরেই। একারণে এই গ্রহে প্রাণের বিকাশ ঘটার মতো উপযুক্ত পরিবেশ থাকতে
পারে বলে বিজ্ঞানীদের দৃঢ় বিশ্বাস। এই বিশ্বাসকে পুঁজি করে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন
ধরে পরিচালনা করছেন বিভিন্ন অভিযান। গণহারে বিশ্বাস করা হয় যে, একসময় মঙ্গলের
বুকে পানি তরল অবস্থায় ছিলো, তাই এখনও ভূপৃষ্ঠের নিচে পানির অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা
আছে। মঙ্গলের আবহাওয়ায় মিথেন পাওয়া গিয়েছে। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ফিনিক্স
মার্স ল্যান্ডার তার পরীক্ষাগারে প্রমাণ করে যে, মঙ্গলের মাটির নমুনায় পানির অস্তিত্ব
রয়েছে। যন্ত্রটির রোবট নিয়ন্ত্রীত হাত দিয়ে মাটির ঐ নমুনাকে একটি যন্ত্রে রাখা
হয় এবং সেই নমুনাকে তাপ দিয়ে বাষ্প তৈরি করে তাতে জলীয় কণা আবিষ্কার করা হয়।
মার্স গ্লোবাল সার্ভেয়ার-এর পাঠানো সাম্প্রতিক ছবিতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, খুব
বেশিদিন হয়নি (বিগত ১০ বছরের মধ্যেই) মঙ্গলের ঊষর ভূমিতে পানি প্রবাহিত হয়েছিলো।
সৌরজগতের শনি গ্রহের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ টাইটানে
দীর্ঘদিন থেকে প্রাণের সন্ধান পাবার আশায় সন্ধান চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার বিজ্ঞানীরা
ক্যাসিনির পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে টেলিগ্রাফ অনলাইন-কে জানান যে, শনির অনেকগুলো
উপগ্রহের মধ্যে একমাত্র টাইটানেই প্রাণ ধারণের উপযোগী পরিবেশ রয়েছে এবং সেখানে
জীবনের উৎপত্তি হয়েছে এবং তারা শ্বাস নিতে পারছে। আরো জানা গেছে যে, এর ভূপৃষ্ঠের
জ্বালানী খেয়ে বেঁচে আছে এই ভিনগ্রহের প্রাণীরা। ইকারাস সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, টাইটানের হাইড্রোজেন গ্যাস গ্রহটির আবহমণ্ডলে প্রবাহিত
হচ্ছে এবং ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি হারিয়ে যাচ্ছে। এথেকেও প্রমাণিত হয় যে, এই
প্রাণীরা শ্বাস নিতে সক্ষম হচ্ছে এবং তারা অক্সিজেন নয় বরং হাইড্রোজেন গ্রহণ করে বেঁচে
আছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা সূর্যের আলোর সাথে বায়মণ্ডলে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলো বিক্রিয়া
করে অ্যাসিটিলিন তৈরি করছে (যদিও ক্যাসিনি'র পাঠানো তথ্যে তা প্রমাণ হয়নি)।
এখনও মানুষ বিজ্ঞানসম্মতভাবে কোনো ভিনগ্রহের প্রাণীর
সন্ধান পেয়েছে বলে জানা যায়নি, আবার এরকম দাবি যে একেবারেই নেই এমনটাও সঠিক নয়।
তবে দেখা যাক আর নাই যাক আধুনিক বিজ্ঞানের সূত্রমতে ভিনগ্রহের প্রাণীদের বিবর্তন
সম্পর্কে একটা ধারণা ঠিকই করা যায়। যেকোনো প্রাণীর ক্ষেত্রের শরীরের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। আর উষ্ণ রক্তের জীবরা ঠান্ডা রক্তের জীবদের তুলনায়
অনেক বেশি সক্রিয় ও সক্ষম। সরীসৃপদের মতো ঠান্ডা রক্তের জীবদের শরীরের তাপমাত্রা পরিবেশের
সঙ্গে বাড়ে-কমে আর বুদ্ধিও তেমনি তাপমাত্রার সাথে বাড়ে-কমে। তাই বিবর্তনের পরের
দিকে এসেছে উষ্ণ রক্তের জীব, যাদের দেহের তাপমাত্রা একই রকম থাকে। ফলে বুদ্ধিমান
প্রাণীরা হয় এদের মতো। ভিনগ্রহের প্রাণীরা বুদ্ধিমান প্রাণী ধরে নিলে তারাও এই গোত্রে
শামিল হবে। ভিনগ্রহের প্রাণীদের আকৃতি
কতটুকু বিশাল হতে পারে তারও ধারণা করা সম্ভব। প্রাণীদের ক্ষেত্রে দৈহিক শক্তি
তাদের পেশির প্রস্থচ্ছেদের উপর নির্ভরশীল। যেহেতু শক্তির
বৃদ্ধির সূত্র হলো:
শক্তির বৃদ্ধি : দৈহিক আকৃতি 2 তাই কোনো প্রাণীর আকৃতি
দ্বিগুণ করা হলে তার শক্তি বৃদ্ধি পাবে চারগুণ (2 2 =4)। কিন্তু এই নিয়মের সাথে
আরেকটা নিয়মও অতোপ্রতভাবে জড়িত, তা হলো:
প্রাণীর আকৃতি : দৈহিক ওজন 3 অর্থাৎ কারো আকৃতি দ্বিগুণ
করা হলে তার ওজন বেড়ে যাবে আটগুণ (2 3 =8)। এই দুটো নিয়ম এক করলে দেখা যায় কারো
আকৃতি দ্বিগুণ করলে তার শক্তি ও ওজনের অনুপাত আগের তুলনায় অর্ধেক হয়ে যাবে।
অর্থাৎ বৃহতাকৃতির মানেই হলো দৈহিক শক্তির অপচয়। নাসা'র বিজ্ঞানীদের
হিসাবনিকাশ অনুযায়ী এই অজানা প্রাণীদের ওজন ৪.৫৪ কেজি
(১০ পাউন্ড) থেকে ১০ টনের মধ্যে থাকবে, এর বেশি বা কম নয়। আবার আকৃতি বড় হলে
পানির নিচে চলাচলে অনেক সুবিধা। কেননা আর্কিমিডিসের তত্ত্ব অনুযায়ী আকৃতির
বিশালতা বাড়লে পানির প্লাবতাও বেশি জায়গা জুড়ে কাজ করবে। এই
তত্ত্ব অনুযায়ী ভিনগ্রহের প্রাণীদের জলচর হবার সম্ভাবনা
থাকলেও তারা 'জলচর হবে না' –এমন তত্ত্বই বেশি প্রচলিত। কেননা বুদ্ধিমত্তার জন্য পানির
চেয়ে স্থলভাগ এগিয়ে আছে। সামুদ্রিক জীবন অনেক সহজ, উত্থান-পতন কম তাই সামুদ্রিক প্রাণীরা
বুদ্ধির দিক দিয়ে স্থলভাগের প্রাণীদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। কেননা পানিতে
প্রতিকুল পরিবেশের সাথে লড়াই স্থলভাগের তুলনায় কম করতে হয়। অনেকে ডলফিনের
উদাহরণ টেনে এই তত্ত্বের বিরোধিতা করতে চাইলেও ডলফিনের বিবর্তন ইতিহাস বলে যে,
তাদের পূর্বপুরুষ সামুদ্রিক প্রাণী ছিলো না, বরং তারা স্থলচর স্তন্যপায়ীর বংশধর। বিবর্তনের শেষের দিকে এসে তারা জলে
আশ্রয় নিয়েছে। বিজ্ঞানীরা ভিনগ্রহের প্রাণীদের বুদ্ধিমান প্রাণী ধরে নিয়ে বলেন
যে, এরকম প্রাণীরা যদি খুব ছোট হয়, তবে কখনোই বুদ্ধিমান হতে পারবে না। কারণ
বুদ্ধিমান হবার জন্য যতটুকু মস্তিষ্ক দরকার তা ধারণ করার মতো দেহ তাদের নেই। জনৈক লেখক
মাইকোপ্লাজমা নামক ব্যাক্টেরিয়ার কথা জেনে তাঁর বইতে গল্প লেখেন যে, ভিনগ্রহের প্রাণীরা
মসুর ডালের চেয়েও ছোট। বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বকে উড়িয়ে দেন। কেননা প্রাণীর আকৃতিকে
কোনোভাবে যদি অর্ধেক করে দেয়া যায়, তাহলে জ্যামিতিক নিয়মে তার উপরতলের ত্বক ও
ভিতরকার কলকব্জার অনুপাত হয়ে যাবে চারগুণ। ফলে দেহের তাপটুকু সমস্ত শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে
পড়বে ও শরীর খুব দ্রুত তাপ হারিয়ে ঠান্ডা হয়ে যাবে। একারণে তাকে খুব ঘনঘন খাবার
গ্রহণ করতে হবে। আর একটা প্রাণী তার জীবনের বেশিরভাগ সময় খাবারের পিছনে ব্যয়
করলে কখনোই বুদ্ধিমান হতে পারবে না।
ভিনগ্রহবাসীদের অস্তিত্ব নিয়ে আশাবাদী কিংবদন্তী
বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। তার মতে এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে। এবং শিগগিরিই মানুষের
মুখোমুখি হবে এলিয়েন। এবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এলিয়েন নিয়ে গোপন
তথ্য ফাঁস হলো। যা কী না রীতিমতে ভয়াবহ। অ্যানোনিমাস নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ নাসার
এলিয়েন নিয়ে গবেষণার তথ্য ফাঁস করেছে। তারা বলছে, সারা বিশ্বকে চমকে দিয়ে ভিনগ্রহীদের
অস্তিত্বের খবর দিতে নাকি গোপনে প্রস্তুত হচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা
নাসা। বিশ্বের একাধিক জঙ্গি সগঠনের তথ্য ফাঁস করেছে এই অ্যানোনিমাস। আইএসের
বিরুদ্ধে রীতিমত জিহাদ ঘোষণা করেছে তারা। এবার তারাই তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে যে
‘নাসা বলছে এলিয়েনরা আসছে!’ একটি ভিডিওতেও এমনটা দাবি করেছে তারা। ইতিমধ্যেই
ভাইরাল সেই ভিডিও। ভাঙা ভাঙা যান্ত্রিক গলায় অ্যানোনিমাসের তরফ থেকে বলা হয়েছে,
শীঘ্রই ভিনগ্রহীদের নিয়ে বড়সড় ঘোষণা করতে চলেছে নাসা। গোপনে চলছে তার প্রস্তুতি। অ্যানোনিমাসের
দাবি, নাসার বিজ্ঞানী থমাস জুরবিউকেন বলেছেন, ‘নাসার সাম্প্রতিক কিছু আবিষ্কারই
বলে দিচ্ছে যে আমরা এলিয়েন লাইফের অনেক কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি।’ তিনি আরও বলেছেন,
‘২৫ বছর আগেও আমরা জানতাম না যে সৌরজগতের বাইরেও আছে গ্রহ। আর আজ আমরা সূর্যের
কক্ষপথের বাইরে প্রায় ৩৪০০ গ্রহ আবিষ্কার করে ফেলেছি। আরও আবিষ্কার করে চলেছি।’
এছাড়াও নাসার তরফ থেকে করা হয়েছে এমন অনেক মন্তব্যের কথা অ্যানোনিমাস উল্লেখ করেছে
যা থেকে স্পষ্ট যে ইউএফও আর এলিয়েনের অস্তিত্ব সামনে আসতে আর বেশি দেরি নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন