হাতের
ফাইলগুলো নাড়াচাড়া করতে করতে আতিক সাহেব চায়ে হালকা চুমুক দিচ্ছিলেন। বিকেল বেলাতে
কাজের দিকে মনোযোগ খুব একটা থাকে না। তবুও কাজ! থানায় ছুটি বলে কিছু নেই। বড় কর্তা
হবার উপকারিতা!
হঠাৎ
পড়িমরি করে এক লোক থানায় এলো। লোকটির পড়নে জামাকাপড় বেশ পরিস্কার, চুল ব্যাকব্রাশ
করা। বয়েস দেখে আনুমানিক ধারনা, ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ!
লোকটা
বলে যাচ্ছে, "স্যার কই! স্যারকে খুব দরকার!"
হাবিলদার
আঙুল দিয়ে ভেতরকার রুম দেখিয়ে দিল।
হন্তদন্ত
হয়ে ভেতরে ঢুকেই,
স্যার!
স্যার! আমার বাসার তিন তলায় লাশ পাওয়া গেছে! জলদি আসেন!
আপনি তো
ফোন করেও আসতে পারতেন?
সময় পাই
নি স্যার। ভয়ে কিচ্ছু মাথায় আসে নি।
আতিক
সাহেব উঠে দাঁড়ালেন। বেল বাজিয়ে হাবিলদারকে বললেন, আনিসকে ডাক! আর্জেন্ট!
স্যালুট
ঠুকে, হাবিলদার চলে গেল।
আপনি
বসুন প্লিজ (আতিক সাহেব বললেন)
লোকটি
এক হাতে কপালের ঘাম মুছছে, বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে তাকে।
কোথায়
পেলেন লাশ?
আমার
বাসার তিনতলা,
আপনার
বাসা?
তালতলা।
ঝটপট
করে একটা কিছু লিখে গেলেন আতিক সাহেব। খুনের তদন্ত প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার,
তাই খুব একটা গা' ঝারা ভাব নেই তার।
আতিক
সাহেব বললেন, আপনি নিশ্চিত থাকুন। আমরা যাব।
আচ্ছা কে আগে দেখল বলুন তো?
আমি
দেখেছি। নক করে ভেতরে যেতেই, ঘর খোলা পাই। বেডরুম এ লাশ দেখতে পাই!
আই সি।
আপনার
নাম?
কামাল
উদ্দিন।
পেশা?
ঠিকাদারি।
স্যার,
স্যালুট দিল আনিস। (ইন্সপেক্টর আনিস এসে গেছে এর মাঝে)
স্যার,
কি ব্যাপার?
হ্যা।
বসো আনিস, এনাদার মার্ডার!
কোথায়
স্যার?
"তালতলা,
তুমি একা কাজ করো জলদি ফরেনসিক টিমকে নিয়ে সেখানে চলে যাও আমি একে নিয়ে আসছি
"
ওকে
স্যার।
পানি
খাবেন?
হ্যা,
না... না স্যার! (গলা কাঁপছে)
নো
টেনশন!
আমরা
এক্ষুনি যাচ্ছি। বলে একগাল হাসি দিলেন আতিক সাহেব।
কিসের
ঠিকাদারি আপনার?
জমি-জমা।
কত বছর
ধরে?
দশ বছর
তো হবেই। ঢাকায় কতদিন ধরে?
ফোনে...
(ক্রিংক্রিং)
দাঁড়ান,
এক মিনিট!
হ্যালো,
স্যার, আনিস বলছি। দেখে হোমিসাইড মনে হচ্ছে!
গলায় লম্বা কাটা, তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে গলায় এবং পিঠে খামচি মানে কিছু
ল্যাসেরেশন আছে।
আর
কিছু?
না
স্যার। আপাতত ওপেন আইতে, এই যা!
কিপ
গোয়িং, পোস্ট মর্টেম করবার আগে টেক সাম পিকচার। এনিথিং মে হ্যাপেন! ভেরী কেয়ারফুল!
ওকে
স্যার আপনি আসছেন কখন?
এই তো,
আমি আসছি। অন মাই ওয়ে।
ফোন
রেখে দিয়ে আতিক সাহেব, "হ্যা, কি যেন বলছিলেন? "
জ্বী,?
ও হ্যা! আমি, মানে আমি পনেরো বছর ধরে আছি।
বাড়িটা
আপনার?
জ্বী।
আমার।
টেবিলে
রাখা পানির গ্লাস থেকে পানি খেলেন আতিক সাহেব। বললেন, "নিন চলুন "
বাইকে
স্টার্ট দিয়ে লোকটিকে বসতে ইশারা করলেন।
লক্ষ্য
তালতলা।
আপনার
নিজের বাড়ি কামাল সাহেব?
জ্বী
স্যার।
ও' বলেই
-বাইকের গিয়ার তুলে দিলেন আতিক সাহেব।
প্রচন্ড
ভীর। কয়েকটা নিউজ চ্যানেল এসে গেছে। লাইভ সম্প্রচার!
আসার
পথেই সেটা নজরে এসেছে আতিক সাহেবের। একটা টিভি দোকানের পাশ দিয়েই আসছিলেন তিনি।
মিডিয়ার
লোকজন গোয়েন্দা মুখের সাথে বরাবরই অপরিচিতি। তাই বাইকে থামা মাত্রই মৌমাছির মত
ছুটে এলো কামাল উদ্দিনের কাছে। বাড়ির কাজের লোক হয়ত কামাল সাহেবের ছবি দেখিয়েছে
সাংবাদিক দের।
এ ধরনের
ব্রেকিং নিউজ পেতে টাকা খরচ করতে আপত্তি থাকে না সাংবাদিক ভাইদের!
কামাল
সাহেবকে ঘিরে প্রশ্ন শুরু হলো,
কি করে
হলো? কখন হলো? কি করতো মৃত ব্যাক্তি ব্লা ব্লা....
আতিক
সাহেবকে দেখেই ইন্সপেক্টর আনিস ছুটে এলো, স্যার! এসেছেন, আই হ্যাভ সাম....
হুম, নট
নাও। দেখনা মৌমাছি আছে!
ঘটনা
তিনতলায় স্যার।
তিনতলায়?
হনহন
করে তিনতলায় গেলেন তিনি। ভেতর ঘরে ফেনলের গন্ধ। বিছানায় ভিক্টিম পড়ে আছে উপুড় হয়ে।
বাইরে থেকে ফ্ল্যাশের আলো জ্বলছে।
সাংবাদিক
ছবি তুলছেন।
আতিক
সাহেব মুখে মাস্ক পড়ে নিলেন, মেল ওর ফিমেল?
"মেল
" স্যার! গলায় কাটা দাগ বেশ ডিপ, বাম থেকে ডানে ক্রমশ সরু!
(এত
কথার মাঝে, জিজ্ঞেস করা হয় নি। ভিক্টিম মেল না ফিমেল!)
ইম্পরট্যান্ট
একটা বিষয় ভুলে গেলাম কি করে আনিস?
নো
প্রব্লেম স্যার। এখানেই থাকত। নাম আখতার। বিজনেস করত। নেশাও করত! খুনী বাহাতি।
সিউর
হলে কি করে?
ঘরে
স্পিরিট পেয়েছি, ড্রিংক করত মে বি। একটা বোতল পেয়েছি ফ্রিজে। প্রথমে হোমিসাইড ভেবে
ভুল করেছিলাম!
ড্রিংকস
ফ্রিজে?
হ্যা
স্যার। সাথে আরো খাবার ছিল। দুদিনের বাসি হয়ত!
পা টিপে
টিপে এগিয়ে এলেন আতিক সাহেব।
হাত-পা
চারদিকে ছুড়ে পড়ে আছে লাশ। বিছানায় রক্তারক্তি ব্যাপার। বেডশিট একদম গোছানো। খুনের
পর হয়ত ফেলে রাখা হয়েছে বিছানায়।
লাশটা
ভালোমত দেখলেন আতিক সাহেব। চোখ দুটো বেড়িয়ে আসছে। পিঠের দিকে লম্বা আঁচড়ের দাগ।
ধস্তাধস্তি হবার সময়ও হতে পারে কিংবা আগেও হতে পারে। "ধস্তাধস্তি নাও হতে
পারে, কিংবা অন্যকোন কারনে! " বললেন আতিক সাহেব।
মানে
স্যার!
ধরো,
পিঠ চুল্কোনির সময় লাঠি দিয়ে! ধস্তাধস্তি হলে বেড শিট এভাবে গোছানো থাকত না!
"জ্বী
স্যার। তাছাড়া গলায় কাটা দাগটা বেশ ডিপ। মানে ক্ষত বেশ গভীর। খুনী বাহাতি সন্দেহ
নেই এতে। তাছাড়া আঘাতের পর অনেকক্ষন বেঁচে ছিলেন। মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে, সবচেয়ে
বড় কথা রক্তপাত কম দেখে আরও সন্দেহ হচ্ছে। ইঞ্জুরি এবং রক্তপাত অনুপাত মিলছে না।
বিছানায় তেমন রক্তপাত হয়নি বলা যায়। যাস্ট গলার আশেপাশে ব্লিডিং।" আনিস বলল
"ওয়েল
অবজারভেশন ইনডিড, ওয়েল ডান আনিস।"
থ্যাংকু
স্যার।
"
তার মানে খুনী খুনের আগে কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে, বাই দ্যা ওয়ে। এটা এনাফ নয়।
ঘরের কিছু খোয়া গেছে?"
আনিস
বলল, "একা থাকতেন স্যার, বলা মুশকিল তবে আলমারি তে দশ হাজার টাকা আছে দেখেছি
"
"হুম,
টাকাগুলো নিয়ে নাও। সেখানে ফিংগার প্রিন্ট থাকবে।"
ওকে
স্যার!
আর কেউ?
হ্যা
স্যার! কাজের লোক আছে।
সার্চ
হিম!
ওকে
স্যার!
আতিক
সাহেব দেখতে লাগলেন। ফরেনসিক টিম কাজ করছে সাথে সাথে। লাশ নেয়া হবে হসপিটালে।
পোস্টমর্টেম
সেখানেই হবে।
ভিক্টিমের
গলায় দিকটা উপুড় হয়ে থাকায়, নিচু হয়ে- বিছানায় শুয়ে সেটা দেখতে গেলেন আতিক সাহেব।
মনে হচ্ছে চোখ বড় বড় করে মৃত লোক তাকিয়ে আছে
এবার তার দিকে। কিছু একটা দেখে আক্রোশ চোখে! সেই সাথে বিছানার চাদরে একটা গন্ধ
পেলেন আতিক সাহেব গন্ধটা ফেনলের চাপে এতক্ষণ নাকে আসেনি।
স্যার!
(আনিসের ডাক)
কি?
কাজের
লোক!
আতিক
সাহেব বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন, নাম কি? কবে থেকে কাজ করছিস?
আমি
জানি না স্যার, কে করছে জানি না!
নাম
জানিস না?
আমি আবু
মিয়াঁ।
ক'দিন
ধরে আছিস কাজে?
এক বছর
স্যার।
আগে
কোথায় কাজ করতি?
আগে
ঠালা ঠেলতাম। আখতার কাকা আমায় কাজে রাখে।
আখতার
কাকা!
আমি
কাকা বলতাম!
আই সি!
(ভ্রু কুঁচকে আতিক সাহেব)
কাকা
কেন?
আমার কেউ
নাই। এতিম। আখতার কাকা আমারে কাজ দিসে। তাই আমার মুরুব্বি সে।
আতিক
সাহেব বললেন,
ওকে, তদন্ত যতদিন চলবে, ততদিন তোমাকে এখানেই
থাকতে হবে।
আইচ্ছা
স্যার।
এখন বল,
তোমার ঘর কোনটা?
আসেন
স্যার! আমার ঘর নীচে সিড়িঘরের পাশে।
সিড়ি
ভেঙে নীচতলায় এলেন, তারা তিনজন।
ঘর খোলাই
ছিল।
আবু
মিয়া যথেষ্ট গরীব সেটা তার ঘরে এসেই বোঝা যাচ্ছে। বিছানার চাদরে ফুটো। এলোমেলো
আসবাবপত্র। একটা আলনা, মশারি, কিছু কাপড়।
মেঝেতে কিছু সবজি পড়ে আছে।
আনিস
বললেন, "এই তোমার ঘর? "
জ্বী
স্যার!
আতিক
সাহেব কিছু না বলে বিছানায় বসে পড়লেন, আসলে এটা পুরোপুরি বিছানা নয়, মাঝারি চৌকি।
বসতে
গিয়েই মটমট করল সেটা।
আবু
মিয়াঁ! (আতিক সাহেব)
স্যার!
কিছু বলবেন?
আমাকে
এক গ্লাস পানি দাও তো! পিপাসা পেয়েছে!
আনতাছি!
বলেই বাইরে গেল সে।
হঠাৎ
বিদ্যুতের গতিতে এদিক-ওদিক উল্টেপাল্টে দেখলেন আতিক সাহেব। প্রথমেই স্টিকের ট্রাংকে।
তারপর আলনা, খাটের তলা।
আনিস,
অবাক হয়ে," কি খুঁজলেন স্যার?"
প্রাইনারি
কনসার্ন। স্যার ক্লু পেয়ে গেলে বলেন না। তিনি এবারেও আনিসকে সেটা বলবেন না। স্যার
ব্যাপক অদ্ভুতুড়ে!
আবু
মিয়া এসে গেছে, স্যার পানি।
এক ঢোকে
পানি খেলেন আতিক সাহেব। পানি শেষ করে বললেন, " আবু মিয়া তদন্ত চলা পর্যন্ত
তুমি এখান থেকে কোথাও যাবে না, গেলে আমাকে জানাবে "
জ্বে
স্যার।
তোমার
রান্না করে দেয় কে?
মর্জিনা
বুয়া।
কখন কখন
আসে?
সকালে
আর সন্ধ্যায়।
তোমার
স্যার বিবাহিত ছিলেন?
না
স্যার।
স্যারের
রান্না কে করত?
ওই
বুয়াই করত।
হুম।
আতিক
সাহেব আনিসের দিকে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলেন। আনিস বুঝে গেছে সন্ধ্যায় বুয়াকে
জিজ্ঞেসবাদ করা হবে। যদি না আসে তবে ফোর্স পাঠিয়ে আনা হবে। তারা আরও আধাঘণ্টা
এখানে থাকবেন।
আবু
মিয়ার হাতে গ্লাস তুলে বেড়িয়ে এলেন দুজন।
দোতলায়
কিছু জিজ্ঞাসাবাদ বাকী আছে।
"বাড়ির
মালিক কামাল উদ্দিন কে" বলল, আনিস।
হুম।
এসো আমার সাথে (আতিক সাহেব)
বেল
বাজাতেই কেউ একজন বলল, "সাব ঘুমাইছে, পরে আসেন। "
আমি
ইন্সপেক্টর আনিস। বলো দেখা করতে এসেছে।
কাজের
লোক না যেতেই পাশ থেকে কামাল সাহেব বেড়িয়ে এলেন। "সরি, আসলে খুব পেরেশানে
আছি, একটু পর পর সাংবাদিক আসে আর হাবিজাবি প্রশ্ন করে তাই বিরক্ত হয়ে,"
না
ঠিকাছে। এটাই স্বাভাভিক!
ঘরে
ঢুকেই আতিক সাহেব, "এটাই আপনার ঘর?"
জ্বী
স্যার।
একা
থাকেন?
নাহ,
কাজের লোক শান্ত আর আমি। বিবাহিত, তবে স্ত্রী-সন্তান দেশের বাইরে থাকে।
কোথায়
জানতে পারি?
হ্যা,
ইতালি।
কতদিন
হবে গেছে?
বছর
চা'রেক। আমার সাথে ফোনে কথা হয়। এর মাঝে দেশে আসেনি। গতকালও কথা হল।
ঘাড়
ঘুরিয়ে কামাল সাহবের দিকে তাকালেন তিনি। চাইছেন তার পরিবার এতে জড়িত না হোক।
কিন্তু
আপনার পরিবার তো সেখানেও এ ব্যাপারটা জানতে পারে?
না। আমি
বলেছি আমি এই বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছি।
বাড়ি বিক্রি!
আনিস বলে উঠল,
ওকে
থামিয়ে,
আতিক
সাহেব বললেন, আতর মাখেন বুঝি?
হ্যা,
আমার বন্ধু সৌদিআরব থেকে এনে দিছে। খুব দামী শুক্রবার ছাড়া গায়ে দেই না।
আজ
শুক্রবার। ৮ তারিখ। আতিক সাহেব সেটা তার হাত ঘড়িতে তাকিয়ে নিশ্চিত হলেন আবার।
আচ্ছা,
আপনার কাউকে সন্দেহ হয়? (আনিসের প্রশ্ন) কামাল সাহেব বললেন, "আমার তো মনে হয়,
কাজের লোক আবু, ওরই কাজ মনে হয়"
কতদিন
ধরে আখতার আপনার বাসায় আছে?
কে?
আখতার
মানে নিহত ব্যাক্তি!
ও তিন
বছর!
আর আবু?
একইসাথে
এসেছে তারা।
আতিক
সাহেব বললেন,
আচ্ছা
এখন আসি, পরে এ নিয়ে কথা হবে। সে সময় এভাবেই হেল্প করবেন নিশ্চই!
হ্যা
হ্যা অবশ্যই।
কি যে
বিপদে পড়লাম বলুন?
হ্যা,
বিপদ আসে কেটে যেতেই! আসি আজ। নীচে একটা কাজ আছে।
বুয়া
আবু মিয়ার ঘরে এসেছে। মুখে কাপড় টেনে বসে আসে এক কোণে।
আনিসেকে
মাথা নাড়িয়ে ইশারা করলেন আতিক সাহেব, "জিজ্ঞেস করো "
কি নাম?
মর্জিনা।
কবে থেকে
কাজ করো এখানে?
ছয়মাস
স্যার।
মালিক
কেমন ছিলেন?
খুব
ভালো। টাকা পয়সা নিয়া ঝামেলা করেন নাই।
ব্যাবহার?
খুব
ভালা।
আতিক
সাহেব প্রশ্ন করল, আজ সকালে এসেছিলে?
হ
স্যার।
আখতারের
সাথে কথা হয়েছে?
না
স্যার। আমি খালি রান্না করে গেছিগা।
তুমি
জানতে? আখতার আজ বাসায়?
হ,
স্যার। আমি দুইজনের খাওন রানছি গা।
গত
মাসের বেতন দিয়েছে তোমায়?
হ,
স্যার।
আচ্ছা
তুমি যে বটি দিয়ে সবজি কাটো সেটা আনো তো!
বুয়া
রান্নাঘর থেকে বটি নিয়ে এলো, আনিস রুমাল দিয়ে সেটা জড়িয়ে একটা পলিব্যাগে ভরল।
আতিক
সাহেব বললেন," তুমি এখান থেকে কোথাও যাবে না, যতদিন আমরা না বলব "
স্যার,
রান্না!
করবে।
(উঠে বাইরে এসে বাইকে স্টার্ট দিলেন আতিক সাহেব)
স্যার,
থানায় আসবেন?
না,
খুনের এফ আই আর লিখে রাখো। আমি অফ ডিউটি!
বাইকের
ধোঁয়া রেখে চলে গেলেন আতিক সাহেব।
অনেকক্ষন
আগে থেকেই মোবাইলটা বাজছে,
ঘুম
চোখে ফোন ধরেই ভিরমি খেলেন আতিক সাহেব,
আনিসের
ফোন। তবে ফোনের কারন অসম্ভব বাজে, কাজের বুয়া খুন হয়েছে।
মর্জিনা
সকালে রান্না করে যাবার পর এই খুন।
খুন করে
বস্তাবন্দী করে ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখেছে কেউ।
আতিক
সাহেব গায়ে জামা জড়িয়ে জলদি বেড়িয়ে এলেন।
একটা
পেট্রোল পাম্পে তেল নেবার পথে দেখলেন, খুন হওয়া আখতার সাহেবের কাজের লোক আবু কোন এক মহিলাকে নিয়ে রিক্সায় চড়ে যাচ্ছে।
বেশ
খোশমেজাজে আছে লোকটা! সাথের মহিলাকেও বেশ হাসি-খুশি লাগলো।
আতিক
সাহেব বাইকে স্টার্ট দিয়ে পিছু নিলেন দুজনের।
আনিস
এসেছে অনেক আগেই। আশেপাশের লোকেরা থানায় ফোন করেই খুনের খবরটা জানায়। ফরেনসিক টিম
নিয়ে এসে গেছে অনেক আগেই। ভিক্টিমের গলায় একই রকম কাটা। যেমনটা আখতার খুন হয়েছিল।
আধা
ঘন্টার মাঝে আতিক সাহেব এলেন, একটু আগেই আই জি ফোন করেছিলেন। ব্যাপক চাপ নিয়ে কথা
বললেন। আতিক সাহেব স্বাধীনচেতা!
কারুর
ধার ধারেন না তিনি।
স্পটে
আতিক সাহেবকে আসতে দেখেই, স্যার বলে ছুটে গেল আনিস।
হোয়াট
মোর?
সেইম টু
সেইম স্যার!
লেটস
সি।
খুনী
বাহাতি, তবে আখতারের সাথে এই খুন মেলানো বোকামি। খুনী খুন করে থাকলেও এটা করেছে
স্রেফ আই ওয়াশ করতে।
খুনের
সাথে বুয়ার হাত ছিল না।
বলেন কি
স্যার?
আমরা
আবু মিয়া নামে যাকে কাজের লোক হিসেবে জানি সে প্রকৃত আবু মিয়া নয়!
খুনীকে
শেল্টার দিয়েছেন বাড়ির তথাকথিত মালিক কামাল সাহেব।
বাড়িটা
জয়েন্টলি কেনা। তিনতলা বাড়ির দুটো তলায় দুজনের ভাগাভাগি। বলে থামলেন আতিক সাহেব
কিন্তু
কে আসল আবু মিয়াঁ? আনিস বলল
আসল আবু
মিয়া কে, তার সাথে আখতার সাহেবের কি সম্পর্ক সেটাই খটকা! আমার আসল আবু মিয়াকে চাই
এবার!
আমি
আসার পথে জমি রেজিস্টার অফিস হয়ে এসেছি। বাড়ির প্রকৃত মালিক আখতার, শুধু ধার করে
কামাল সাহেবের থেকে টাকা নিয়েছিল আখতার। বিশাল অংকে সেটা।
"কিন্তু
স্যার যে আবু মিয়া নামে আছে এ কে? "
"এর
নাম, হাফিজ মুন্সী, মাদ্রাসার ছাত্র এবং বিবাহিত। "
বিবাহিত?
"হুম,
লাকিলি, আজ ওকে দেখতে পাই সস্ত্রীক! আজ
পাম্পে বাইকের তেল নিচ্ছিলাম, সাথে মহিলা দেখেই ফলো করি।"
"স্যার
তার মানে কেউ আবু মিয়াকে পরিচয় গোপন করে রেখেছে।"
রাইট!
আখতার
সাহেবের রুমে পাওয়া টাকায় ফিংগার প্রিন্টের রিপোর্ট পেলে?
আজ
বিকেলে পাবো স্যার!
চল,
এবার থানায় যাওয়া যাক!
কিন্তু
লাশ?
পোস্টমর্টেম
করতে পাঠাও।
ফিংগার
প্রিন্ট চাই। আপাত দৃষ্টি তে আবু মিয়াকে খুনী মনে হচ্ছে। তবে কেউ সন্দেহের বাইরে
নয়!
বুধবার
সকাল, চেয়ারে পা তুলে, অনেকক্ষন ভাবছেন আতিক সাহেব।খুনের জন্য কি কারন থাকতে পারে?
কোন
গোপন কিছু? গোপন তথ্য? শুধু অর্থের জন্য খুন হয়নি। তবে আইওয়াশ করতে কেন মর্জিনা
খুন?
নাকি
সত্যি মর্জিনা কিছু জানত?
আর আবু
মিয়ার জায়গা অন্য কেউ কেন নেবে?
কামাল
সাহেব আবু মিয়াকে চেনেন না? যদি চিনে না থাকেন তবে আমাদের কেন বললেন না!
মর্জিনার খুন কে যদি আইওয়াশ ধরে নেই, তবে নিশ্চই
কিছু একটা আছে আড়ালে।
বেল
বাজালেন আতিক সাহেব, ক্রিং শব্দ করল ধাতব যন্ত্র
হন্তদন্ত
হয়ে হাবিলদার এসেই লম্বা স্যালুট!
স্যার!
আনিসকে
ডাক, বল পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়ে আমার রুমে আসতে।
ইয়েস
স্যার।
কিছুক্ষন
পর আনিস এলেন,
স্যার,
আসব?
হ্যা,
এনি প্রগ্রেস?
নাথিং
স্যার!
টেক এ
সিট।
(চেয়ার
টেনে বসে গেলেন আনিস)
স্যারকে
চিন্তিত দেখে আনিস বলল, স্যার রিপোর্টে যা পেয়েছি তাতে নিহত মহিলা বিবাহিত থাকার
প্রমাণ পাওয়া গেছে। মানে, সি হ্যাজ...
আতিক
সাহেব, থামিয়ে দিলেন আনিসকে। রিপোর্ট টা এনেছো?
হাত
বাড়িয়ে এগিয়ে দিল আনিস।
আতিক
সাহেব গোলকধাঁধা থেকে মুক্তির উপায় পেলেন এবার।
মানে
মর্জিনা কি তবে? কিপ সার্চিং আনিস বলেই আতিক সাহেব ঝটপট বেড়িয়ে গেলেন।
গলির
মাথায় যে বাসার গতকাল আবু মিয়া ওরফে হাফিজ মুন্সীকে দেখেছিলেন আতিক সাহেব আজ
সেখানে একটা চায়ের দোকানে বসে আছেন তিনি। মুখে নকল দাড়ি, মাথায় টুপি, পাঞ্জাবি
গায়ে।
চা
খাইবেন হুজুর? চা দিমু?
হুম।
আতিক
সাহেব লক্ষ্য করলেন আবু মিয়া ওরফে হাফিজ দু তিন জনকে নিয়ে সে বাসায় ঢুকল। আতিক
সাহেব ঘড়ি দেখলেন, চা আরেক কাপ অর্ডার করে বসে আড়চোখে দেখে যাচ্ছেন।
এরা
তিনজন একসাথে বেড়িয়ে গেল। এদের সবার হাতে ব্যাগ।
তিনজন
কে এগিয়ে দিয়েই দ্রুত ভেতরে চলে গেল হাফিজ।
হুজুর
চা?
স্তিমিত
গলায়, "না "।
কলিং
বেল বাজার সাথে পর দরজা খুলে, আরে আপনি? আসুন! সেই যে গেলেন। নিন, বসুন। কিছু পেলেন? খুনীকে ধরা গেল?
আতিক
সাহেব সোফায় বসেই গায়ের গন্ধটা এবার পেলেন।
আজ
জুম্মাবার। আতর মেখেছেন কামাল সাহেব।
কড়া
গন্ধ! গোসল না করলে সেটা সহজে গা থেকে যাবে না।
হাচ্চি!!
ই ই ই!!
আপনার
কি ঠান্ডা লেগেছে নাকি? কামাল সাহেব জিজ্ঞাসা করতেই প্রত্তুতর আতিক সাহেবের, না
না!!
"
দেখুন, আমি একটু ইতালি যেতে চাই, আমার পরিবার কিভাবে যেন জেনে গেছে খুনের
ব্যাপারে! খুব চিন্তিত আছে" মুখ ভারী করে বললেন কামাল উদ্দিন।
হ্যা
অবশ্যই! নিশ্চই যাবেন কিন্ত কিছুদিন পর। যদিও প্রগ্রেস পাইনি। সেটা হয়ে যাবে।
হঠাৎ
ড্রয়িংরুমে এসে একজন "মামা, আপনার ফোন ইতালি থেকে "
আবার
ফোন! দেখুন কান্ড! আপনি বসুন আমি আসছি।
শান্ত
স্যারকে চা দাও।
আচ্ছা।
শান্তর
চেহারা দেখে ঠিক চিনে ফেলেছেন আতিক সাহেব। আবু মিয়াকে ফলো করে যেদিন চায়ের দোকানে
ছিলেন। সেদিন তিনজনের সাথে এ ছেলেটিও ছিল। প্রথমদিন এ বাসায় এসে তেমন সন্দেহ হয়নি
বলেই ভুলটা হয়েছিল, বয়েস বাড়ছে আতিক!! মনে মনে বললেন তিনি।
একটু পর
কামাল সাহেব চলে এলেন, শান্ত চা দিয়ে গেছে এর মধ্যে। নিন চা খান! দেখুন না, বারবার
ফোন করে যাচ্ছে ইতালি থেকে!
আতিক
সাহেব বললেন,
-আখতার
সাহবের কোন শত্রু আছে কি? বা বন্ধু?
-আমি
তাকে তেমন চিনি না। আমার বাসায় জাস্ট ভাড়া থাকতেন। কি করতেন সেটা তো বলেছি তবে বেশ
রাত করে ফিরতেন।
-রাত
করে?
-হ্যা,
আবু মিয়াঁ বাইরের গেটের চাবি চাইতে প্রায় আসত।
-টাকা
পয়সা?
-সে,
জানি না! তবে দেখেছেন তো, একদম গরীব নয়।
- ঘরটা
আরেকবার দেখা যায়?
-ডেফিনেটলি!
শান্ত
চাবি নিয়ে আয় তো!
আতিক
সাহেব চা না খেয়ে এক গ্লাস পানি খেলেন।
চা
খেলেন না?
আসলে
দুপুর হয়ে গেছে লাঞ্চ টাইম! হাসিমুখে আতিক সাহেব।
লাঞ্চ
আজ এখানেই করে গেলেন?
নো
থ্যাংকস! একটা উপকার করলে ভালো হয়। আপনাদের বাড়ির সবার ছবি যদি এক কপি পেতাম ভালো
হত!
হু,
হ্যা পাবেন কাল।
আর হ্যা
আপনার কাজের লোক এবং আবু মিয়া এদের ছবিও।
আচ্ছা।
(কামাল সাহবের উত্তর)
দোতলার
ঘর খোলা হল,
এই নিয়ে
দ্বিতীয় বার এই ঘরে এলেন আতিক সাহেব। ঘরটা আগের মত আছে।
টেবিলের
সাথে ছোট একটা ড্রয়ার দেখতে পেলেন আতিক সাহেব। ড্রয়ার টেনে দেখলেন সেটা ভর্তি নানা
কাগজ।
সব কাগজ
বের করে হাতে নিলেন আতিক সাহেব। এগুলো নিয়ে যাচ্ছি। আলমারির দেরাজ খুলে দেখলেন।
কয়েকটা জামা কাপড় আছে। বেশ পরিচ্ছন্ন সেগুলো। ভেতরের ড্রয়ার দুটো লক করা।
আতিক
সাহেব চাবির কথা জিজ্ঞেস করলেন না।
আচ্ছা,
আজ আসি। পরে আবার আসব।
বাইকে
উঠেই আনিসকে ফোন দিলেন, আনিস যেদিন খুন হয়েছে সেদিন কি আলমারির ড্রয়ারে তালা ছিল?
কেন
স্যার?
জলদি
বল!
নো
স্যার।
ফোন
কেটে দিলেন আতিক সাহেব। খুন হলে কিংবা পুলিশ কেস হলে রুমের তালার দ্বায়িত্ব
পুলিশের কাছে থাকে কিন্তু কামাল সাহেব আলমারি তে তালা দিয়েছেন কেন?
স্যার!
হুম বসো
আনিস।
আপনার
হাতে?
প্রুফ।
কথায় আছে "চোরের দশদিন আর সাধুর একদিন "
আনিস
এটা বুঝেছে, স্যার কেস সলভ করেছেন। কিন্তু সেটা কি বুঝতে পারছে না আনিস।
আতিক
সাহেব বললেন, "হ্যাভ ইউ নোটিশড শান্ত, মানে কাজের ছেলে? "
হ্যা
স্যার।
জানো কে
সে?
না!
আবু
মিয়া!
কি
বলছেন স্যার!
তবে তার
নাম?
ধর আমি
যদি তোমার নাম বলি আতিক, তাহলে তোমাকে যারা চেনেনা তারা তোমাকে কি নামে ডাকবে?
আনিস ওর আতিক!
আনিস
যুক্তি মেনে নিল।
আতিক
সাহেব, বলে যাচ্ছেন। হাফিজ মুন্সী মানে নকল আবু মিয়া কামাল সাহবের ভাই। মানে সৎ
ভাই।
বেশ
কিছুদিন যাবত ভাইকে টাকা দেবার জন্য চাপ দিচ্ছিল। ভাই কামাল যথেষ্ট একরোখা, না!
কিছুতেই টাকা দেবেন না। নিজের ভাই বলেও স্বীকার করেন না তাকে। ক্ষোভ জমা হয় হাফিজ
মুন্সীর মনে।
এদিকে
ভাই হাফিজ মুন্সী, পড়ালেখা করেছে মাদ্রাসাভিত্তিক।
কামাল
সাহেব বেশ টাকাপয়সা থাকায় এলাকায় পরিচিতি বেশী। মুখে দাড়ি,পকেটে টাকা। জুম্মাবার
নামাজ। কেউ কি বলবে তিনি নারীলোভী?
বাড়ির
কাজের মহিলা মর্জিনার সাথে অবাধ সম্পর্ক।
তাই
মর্জিনা খুন!
যাতে
নিজের চরিত্র টা আবার "কেঁচো খুড়তে সাপ না বেড়োয় "
"তার
মানে আবু মিয়াঁর নামে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে স্যার! "আনিস বলে উঠল।
"হ্যা,
তোমার গেস প্রায় মিলেছে কিন্তু একটু সমস্যা আছে, আসলে আসল আবু মানে শান্ত নামের
ছেলেটা বা'হাতি। সেদিন কামাল সাহেবের বাসায় গিয়ে যখন চা নিয়ে এল ছেলেটা তখনি বুঝে
গেছি সেটা। খুন সেই করেছে! আখতারের ড্রয়ারে তার কিছু কাগজ পেয়েছি। নিজের কিছু
সম্পত্তি সে আবুর নামে দিয়েছিল। আসল আবু ওরফে শান্ত সেটা জানত, তেমনি জানত কামাল
সাহেব।"
কিন্তু
হাফিজ?
"হাফিজ
এখানে আসবার পর ভাইয়ের জমি-জমা, টাকাপয়সার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জেনেছে। আবু মিয়ার
নামে সম্পত্তি আছে। তাই সে আবু মিয়া সেজে
এই
বাড়িতে ঢোকে যেদিন খুন হয়।
কামাল
সাহেব জানতেন না তার ভাই আবু মিয়া সেজে বাড়িতে ঢুকেছে। যখন জানলেন, তখন তিনি
বলেছিলেন আবু মিয়াকে তার সন্দেহ হয়! এক ঢিলে দুই পাখি! বুঝলে? "
হ্যা
তাইতো স্যার! মাথা চুলকে বলল, আনিস।
আর আসল
আবুকে বাঁচাতে নিজের কাজের লোক সাজিয়ে নেন কামাল সাহেব।
কিন্তু
দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, শান্ত আবার ডুয়েল এজেন্ট! একাধারে সে কামাল সাহেবের কাছ
থেকে টাকা নিতো এবং ইদানিং সে কামাল সাহেবের ভাই হাফিজ কে সহায়তা করত! কারন তার
মনে ভয় এসেছিল পুলিশ না আবার আসল আবু ওরফে শান্ত কে চিনে না ফেলে। কারন দুটো খুন
এবং
দুটো
খুনই তো ওর হাতে!
আনিস,
এক মনে শুনে গেল স্যারের কথা। কিন্তু আবু মিয়া কে চিনলেন কি করে?
ভোটার
আইডি আনিস। তাছাড়া আমি গতকাল গিয়েছিলাম কামাল সাহেবের বাসায়। সবার ছবি চেয়েছিলাম,
পেয়েছি।
হাফিজ
মুন্সীর দাখিল পড়ুয়া ছবিও ছিল এতে। এদিকে, মানে হাফিজ এবং কামাল সাহেবের ফ্যামিলি
ফটোতে অসম্ভব মিল।
শান্তর
ছবি অবশ্য কাল তোলা হয়েছে। মিতা স্টুডিও থেকে।
স্যার
এতে তো?
হুম,
বলোতো আবুর নাম কেন বলেছিলেন কামাল সাহেব?
"যাতে
নকল আবু ফেঁসে যায়। " আনিস বলল।
আখতার
সাহেব কেন খুন হলেন?
মনে আছে
বাড়ির ব্যাপার?
হ্যা,
জায়গার মালিক কিন্তু আখতার! আখতার রাত করে ফিরতেন। শান্ত ঘুমকাতুরে, কামাল সাহেবের
সাথে এ নিয়ে একদিন বেশ তর্কাতর্কি হয়।
ধস্তাধস্তি
হয় কামাল এবং আখতারের! এক সময়ে মদের বোতল দিয়ে মাথায় আঘাত করেন কামাল। এক আঘাতে
অজ্ঞান হয়ে যায় আখতার।
এরপর
ছুরি দিয়ে গলা কেটে বিছানায় ফেলে রাখে শান্ত ওরফে আবু।
খুন
করার পর গা মুছে পরিস্কার করা হয়। আংগুলের ছাপ মুছে ফেলতে। তবে ধস্তাধস্তির চিহ্ন
স্পষ্টত ছিল।
স্যার
এখন?
নাও ডু
ইউর ডিউটি আনিস!
ইয়েস
স্যার। স্যালুট ঠুকল আনিস।
(সমাপ্ত)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন