মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১৬

গল্পঃ কেস নম্বর সতেরো



টেবিলের উপর রাখা ফোনটা বাজতেই সেটা তুলে নিলেন আতিক সাহেব,
হ্যালো, কে?
স্যার আমি আনিস।
আপনাকে আসতে হবে একটু,
কোথায়?
আতিক সাহেব বা’ কাঁধে ফোনটা রেখে তড়িঘড়ি করে ঠিকানা  লিখে ফেললেন।
হ্যা আমি আসছি। লাশ পোস্টমর্টেম করতে হবে। আমি আসার আগে কেউ যেন না যায়।
ওকে স্যার।
আতিক সাহেব গোয়েন্দা বিভাগে আছেন প্রায় বছর দশেক, জুলিফিতে পাঁক ধরেছে কিন্তু যথেষ্ট সবল।
হাতঘড়িটা পড়ে দ্রুত বাইক নিয়ে বেড়িয়ে এলেন। গন্তব্য মিরপুর দুই।
আধা ঘন্টার মাঝে পৌঁছে গেলেন ভিক্টিম এলাকায়।
প্রচন্ড ভীর করে আছে লোকজন সেখানে, বাইক নিয়ে ঢোকা যাচ্ছে না।
আতিক সাহেব আসতেই একদল পুলিশ সদস্য তৎপর হয়ে, বাঁশি বাজিয়ে লোকজনকে সরাতে শুরু করল, পি ...পি...পিপি...
আতিক সাহেব চোখের সানগ্লাস খুলতেই, ইনচার্জ অফিসার ছুটে এল।
স্যার!! বলেই স্যালুট ঠুকল শব্দ করে।
স্যার, আসেন আমার সাথে।
আতিক সাহেব দেখলেন বাড়িটা চারতলা বিল্ডিং এর, এছাড়া নীচে বাগান আছে। বাগানে পানি দেয়া হয় সেটা গাছের চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে। বাড়িতে ঢোকার জন্য বাইরে মেইন গেট। সেখানে বড় করে লেখা ‘কুকুর হতে সাবধান’
‘হুম, বাড়িতে কুকুর আছে তাহলে?’ বলেই ভ্রু কুঁচকে আতিক সাহেব, সানগ্লাস বুকপকেটে ভাজ করে রাখলেন।
জ্বী স্যার। ওই দেখেন!
আতিক সাহেব দেখলেন। বিলিতি একটা কুকুর বাঁধা আছে কলাপ্সিবল গেইটের কাছে। এত লোক দেখতে পেয়ে সেটা কুই-কুই শব্দ করে যাচ্ছে,
আতিক সাহেব জানতে চাইলেন,’আচ্ছা ভিক্টিমকে কে আগে দেখল?’
স্যার, কাজের লোক সাদেক মিয়াঁ।
তারপর স্যার সবাই শব্দ শুমে ছুটে আসে।
আতিক সাহেব, মুখের ভেতরে জ্বিব্বা ঘুরাচ্ছেন। কিছুক্ষন ভেবে বললেন, চল লাশ দেখি
আসেন স্যার।
লাশের ঢাকা কাপড় তুলে দেখলেন আতিক সাহেব, একদম থেতলে গেছে। সরাসরি চার তলা থেকে পড়ে গেছে। বাড়ির ছোট মেয়ে। নীলা নাম মেয়েটির। স্কুলে পড়ে ক্লাস এইটে। সুতরাং বাচ্চাদের মত লাফালাফি করে পড়ে যাবার মত বয়েস নয়!
ছাদ কোনদিকে আনিস? ইনচার্জ অফিসার আনিস, হাতের ইশারায় দেখিয়ে বলল,
‘স্যার ছাদের রাস্তা এইদিকে’
আতিক সাহেব এবং আনিস উঠতে থাকলেন বাড়ির সিড়ি ধরে
সিড়িতে উঠতে উঠতে আতিক সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, কি করে ঘটল?
স্যার, সরাসরি ছাদের থেকে নিচে পড়ে গেছে!
আই সি... বলে ভ্রু ভাজ করলেন আতিক সাহেব।  
আতিক সাহেব বললেন কি করে বুঝলে?
স্যার ছাদের রেলিং নেই বললেই চলে, তাছাড়া গতকাল বৃষ্টি হয়েছে, ছাদ বেশ পিচ্ছিল।
আতিক সাহেব ছাদে এসেই দেখলেন আনিসের কথা ঠিক। ছাদে কোন রেলিং নেই। দুই ইঞ্চি করে ইটের সারি দিয়ে কোনরকমে রেলিং দেয়া হয়েছে।
ছাদের আশেপাশে একবার দেখে আতিক সাহেব নিশ্বাস ছাড়লেন, কি বুঝলে আনিস?
আনিস বলল, ‘স্যার, মনে হয় পিছলে পড়ে গেছে’। তাছাড়া ...
চল আনিস নীচে যাই। পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলি।
চলেন স্যার।
নীলা মেয়েটির পরিবার দোতলায় থাকে, নিজেদের বাড়ি। বড় ভাই ইঞ্জিনিয়ার। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তাই দু বোন এবং এক ভাই আর মা-বাবা নিয়ে নীলাদের পরিবার। নীলা বাসায় একা থাকে। বাবা বিজনেস, ভাইয়া ফার্মে আরমা বাসায়। বোনের তো নিজের সংসার আছেই।
নীলার মা কেঁদে অস্থির হয়ে গেছেন, ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছেন এখনো।
আনিস, আতিক সাহেবকে বলল, স্যার, এখনই জিজ্ঞাসা করবেন?
আতিক সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কিছু জানতে চেয়েছো?
না স্যার, আমরা ভিক্টিমের বাবার সাথে আর ভাইয়ের সাথে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছেন না।
আতিক সাহেব ভেবে বললেন, ভিক্টিমের মায়ের সাথে কথা বলা দরকার। এসো আমার সাথে।
আতিক সাহেব কিছুটা নীচু স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার কি কাউকে সন্দেহ হয়?
নীলার মা, রেহেনা বানু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার মাঝে জবাব দিলেন, ‘না বাবা!’ আমার মেয়ের মত ভালো মেয়ে আর নাই’ ও কারও সাথে যায় না- খালি স্কুল আর পড়াশোনা’
আতিক সাহেব বললেন, বন্ধু? বান্ধবী?
না বাবা, এক বান্ধবী ছিল ওর কিন্তু কয়েকদিন আগেই ও স্কুল বদল করে অন্য স্কুলে চলে গেছে।
কতদিন আগে?
একমাস বলেই কেঁদে ফেললেন রেহেনা বানু।
আতিক সাহেব আনিসকে বললেন, আনিস এই বাড়িতে কে কোথায় কতজন থাকে আমার আধা ঘন্টার মাঝে রিপোর্ট চাই।
ইয়েস স্যার। বলে স্যালূট দিয়ে চলে গেল আনিস।
আতিক সাহেব কিছুক্ষন অপেক্ষা করে বললেন, আচ্ছা আপনার কাউকে সন্দেহ হয়?
জানি না বাবা, আমার মেয়ে কারও সাথে-প্যাচে নাই।
আপনার মেয়ে মানে নীলা কি প্রায় ছাদে যেত, না...
না বাবা, ও ছাদে বসে থাকে সবদিনই। বিকালে সকালে প্রায় সময়ই যায়। বই পড়ে গাছে পানি দেয়। এমনভাবে পড়ে যাবে ভাবিনি...নি ই ই বলে কেঁদে দিলেন নীলার মা।
আতিক সাহেব উঠে দাঁড়ালেন। তার কাজ কিছুই হল না। আপাতত পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে না এলে কিছু করা যাচ্ছে না।
আতিক সাহেব নীলার বাবা-ভাইয়ের সাথে কথা বলে আশাব্যাঞ্জক কিছু পেলেন না। তারাও ঠিক করে বলতে পারছেন না কি করে পড়ে গেল। তবে আতিক সাহেব এটা বুঝতে পেরেছেন। নীলা পড়ে যায়নি ওকে ফেলে দেয়া হয়েছে ছাদ থেকে।
স্যার... স্যার?
কিছু পেলে আনিস?
না স্যার। এই বাড়িতে নীচতলার লোকজন এক সপ্তাহ ধরে নাই। আর তিন তলায় যে ফ্যামিলি থাকে তারা দুজনেই চাকরি করে। বিকেলে বাসায় কেউ থাকে না।
আতিক সাহেব বললেন, চারতলায়?
আনিস একটু ভেবে বলল, চারতলায় তো দারোয়ান আর কাজের লোক থাকে।
ইয়েস, পেয়েছি বলেই আতিক সাহেব আনিসকে বললেন, আসো আমার সাথে!
গলায় গামছা দিয়ে কাজের লোক বসে আছে, পাশে দাঁড়িয়ে দারোয়ান।
কি? নাম কি?
মোখলেস।
কি করা হয়?
স্যার, ‘আমি কিচ্ছু জানি না। আমি নীচে রান্না করতে ছিলাম। শব্দ পাইয়া ছুইটা গেছি!’
আতিক সাহেব বললেন, ‘আমি তো শুনলাম, তুমি আগে গেছ?’
না স্যার। রবি আগে গেছে!
রবি কে?
আমি হুজুর, আমি পাহারা দেই।
কিন্তু বাড়িতে তো কুকুর আছে! আনিস বলে উঠল
আতিক সাহেব বললেন, তুমি কিভাবে দেখলে?
আমি স্যার নীচে গেটের কাছ আছিলাম। আমার ঠিক তিনহাত সামনে আফামনি ধুম কইরা পড়ে।
তুমি ভয় পাওনি?
পাইছি স্যার, মেলা জোরে শব্দ হইছে!
আচ্ছা তোমার আফামনির সাথে কারও ভালোবাসা মানে বন্ধুত্ব ছিল?
আছিল স্যার। কালা কইরা চশমা পড়া এক পোলা স্যার। ভাল স্মার্ট!
আতিক সাহেবের মাথায় খটকা লাগল। দারোয়ান বলছে এক কথা এদিকে ভিক্টিমের ম-বাবা বলছে আরেক কথা!
আচ্ছা ঠিকাছে, তোমরা যাও। আমি না বলা পর্যন্ত কেউ এই বাড়ি থেকে পালাবে না।(কড়া গলায়)
জ্বী স্যার। (ওরা দুজনে চলে গেল)
আনিস বলল, স্যার এই ব্যাপারে আর কথা বলবেন না?
না।কাল একবার আসব বিকেলে। তুমি লাশের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট কালকের মাঝেই জোগাড় কর।
জ্বী স্যার।
আমি থানায় যাচ্ছি। আমাকে পরে ইনফর্ম করবে।
কলাপ্সিবল গেটের বাইরে এসে চোখে সানগ্লাস দিলেন আতিক সাহেব, তাকে দেখে খাঁচার বিলেতি কুকুর টা ঘেউ করল একবার।
মুখ দিয়ে চুকচুক শব্দ করে আতিক সাহেব কুকুরটাকে ডেকে বললেন, ‘কাজের বেলায় খবর নাই, কাজ ফুরালে ঘেউ!’
বিকেলে শরীরটা ম্যাজমেজে লাগছিল আতিক সাহেবের, এভাবে কেসের পর কেস দেখতে থাকলে নিজের লাইফই কেস খেয়ে যাবে। তবুও চাকরি কি করার!
বাইকে স্টার্ট দিয়ে সোজা মিরপুর ২।
চারতলার সাদা রঙ করা বাড়িতে ঢোকার আগে দারোয়ানের সালাম, আসলামালাইকুম স্যার’
তোমার নামটা সেদিন জানা হয়নি!
স্যার, আমি আখতার হোসেন।
তো আখতার এর মাঝে কেউ এসেছিল বাড়িতে?
না স্যার।
কালো মতন যে ছেলেটা আসতো, ওর বাড়ি চেনো?
না স্যার। সে বাসায় আসত না গেট থিকাই চইলা যাইত।
‘আই সি’ আচ্ছা, ঠিকাছে আখতার।
আতিক সাহেব এবার বাড়ির কাউকে কিছু না বলে সরাসরি ছাদে চলে গেলেন। ছাদে ফুলের টব আছে তিনটে। একটা টবে ফুল আছে কিন্তু বাকীগুলোতে একদম অযত্নের ছাপ। কেউ পানি দেয়না বলে মনে হয়।
উকি দিয়ে একবার ছাদ থেকে নীচে দেখতে যাচ্ছিলেন আতিক সাহেব, পেছন থেকে ডাক দিল, কে?
আতিক সাহেব আচমকা ফসকে যাচ্ছিলেন সেখান থেকে, কেউ পেছনে ডাকবে ভাবেন নি তিনি।
ঘুরে দেখলেন নীলার বাবা।
তিনি বললেন, আপনি এখানে? ভেতরে চলুন।
হ্যা, চলুন। কখন এলেন?
এইত। একটু আগেই।
সিড়ি ধরে দোতলায় নেমে এলেন তারা। আতিক সাহেব লক্ষ্য করলেন তিন তলার ঘরে তালা নাই অথচ এদের দুজনের অফিসে থাকার কথা।
আতিক সাহেব বললেন, আপনি যান। আমি তিনতলায় কথা বলে আসছি।
বেল বাজাতেই ট্রাউজার পরা একজন দরজা খুলে দিল।
কে আপনি?
আমি ডিটেক্টিভ আতিক, স্পেশাল ব্রাঞ্চ সি আই ডি। আসতে পারি?
ও সিউর! আসুন।
বাইরের থেকে ভেতরের ঘর বেশী সাজানো। দেয়ালে বেশ দামী পেইন্টিং। আসবাবপত্রের মাঝে বেশ আভিজাত্য ভাব আছে।
কি খাবেন?
নো থ্যাংক্স! আসলে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসার ছিল।
বুঝেছি নীলার ব্যাপারে তো! দেখুন কি ভালো মেয়ে কি হয়ে গেল বলে ভদ্রলোক মুখ ভার করে গেলেন।
নীলা কেমন মেয়ে ছিল? মানে বন্ধু-বান্ধব, বাবা-মা সবার সাথে এই বাড়ির?
খুব ভাল মেয়ে। এমনিতে কথা খুব একটা বলত না
কেন? বোবা ছিল নাকি? আতিক সাহবের প্রশ্ন
আরে না ...না... একটু চুপচাপ স্বভাবের।কিন্তু খুব ভাল।
আপনি একা থাকেন?
না না (হেঁসে উঠলেন লোকটি) আমার স্ত্রী আছে সাথে। একটা এন জি ও তে আছে ও।
তা, উনি কি অফিসে?
হ্যা।
আচ্ছা তাহলে আসি।
এক কাপ চা খেয়ে যান?
না। পরে এসে খাব। মৃদ্যু হাসি দিলেন আতিক সাহেব। দশ বছরের গোয়েন্দা জীবনে এই সিম্পল কেস কেন যে জটিল করে যাচ্ছেন তিনি নিজেই বুঝতে পারছেন না।
সিড়িতে নামতেই আতিক সাহেবের ফোন বেজে উঠল, হ্যালো
স্যার, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেয়েছি। সামথিং ফিসি!!
আমি আসছি!
সরাসরি নীচে  নেমেই বাইকে স্টার্ট দিলেন তিনি।উদ্দেশ্য সরাসরি থানা।
তিনি যা আন্দাজ করেছেন তা প্রায় সঠিক। মেয়েটি নেশাগ্রস্থ ছিল। রিপোর্টে তাই আছে।
আতিক সাহেবের সন্দেহ মিলেছে কিন্তু বাড়ির লোকের কারও কথার সাথে সেটা তো মিলছে না।
আনিস নিচু গলায় বলল,স্যার কফি বলব এক কাপ?
হুম। (মৃদ্যু ভাবে বললেন আতিক সাহেব)। তিনি শুধু একটা শব্দ খুজে পাচ্ছেন না, কিন্তু কেন?
মেয়েটি কারও সাথে কথা বলত না, সে নেশা করত। তার বন্ধু নেই সে মানলাম কিন্তু ছাদ থেকে শুধু নেশার ঘোরে পড়ে যাবে। যেখানে সে প্রতিদিনই ছাদে যায়। আর রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে শরীরের সামনে ইঞ্জুরি। পেছন থেকে কেউ ধাক্কা... ক্রিং ক্রিং (টেবিলের ফোন বেজে উঠল)
হ্যালো, স্যার আমি আখতার! অনেক কস্টে আপনার থানায় ফোন করছি!
কি হয়েছে আখতার? খুলে বল?
স্যার সেই ছেলেটা আইছে, আমি ধইরা রাখছি আপনে আসেন তাড়াতাড়ি!
বাইকে আনিসকে নিয়েই ছুটলেন মিরপুর ২ এর সেই বাড়ির দিকে।
সালাম স্যার, এই সেই ছেলে!
নাম কি?
মৃদুল!
কি করা হয়?
পড়ি, ক্লাস এইটে।
এই বয়সেই নেশা করিস? (রেগে গিয়ে আতিক সাহেব)
না স্যার, আমি না! আমি না!...
কে?
নীলা।
কি নেশা?
হিরোইন!
কে এনে দিত?
আমি স্যার। আমায় টাকা দিত আমি আনতাম।
নিজে নেশা করিস নি বিশ্বাস করব কি করে?
স্যার, সত্যি বলছি। সেদিন আমাকে হিরোইন আনার টাকা দেয় নীলা। এই টাকা কই পেত জানতাম না। এক হাজার টাকা দেয় আমায়। আমি এনে দিয়ে চলে যাই।
বাহ, এত বড় উপকারের কারন?
স্যার আমি ওকে পছন্দ করতাম!
চড় মেরে দাঁত ফেলে দেব! সত্যি বল?
সত্যি স্যার।আসলে বাসায় ওকে কেউ কিছু বলত না। সবাই জানে ওর নেশার ব্যাপারে কিন্তু কিছু বললেই জিদ করত ও। কারও কথা শুনত না। সেদিনও আমি গেট থেকে দারোয়ানের হাতে দিয়ে যাই।ওদের বাসার কুকুরটাকে আমার ভয় করে। তাই কখনও ভেতরে আসি নি। সেদিন দেবার পর আমি আর জানি না। বলে  থেমে গেল ছেলেটি।
আনিস!
জ্বী স্যার, আসো আমার সাথে তিনতলায়!
কিন্তু স্যার।
নো কিন্তু! ফোর্সে খবর দাও। আমরা ধরতে যাচ্ছি কালপ্রিট কে।
তিনতলায় বেল বাজাতেই চাঁদ দেখার মত অবাক হলেন তিনতলার বাবু আহম্মেদ। যাকে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল আতিক সাহেবের।
আপনাকে থানায় যেতে হবে আমার সাথে ‘মিস্টার বাবু’
আমার দোষ?
আপনি এডাল্টরি কেসে অভিযুক্ত!
মানে? কি বলতে চান আজেবাজে?
শুকনো হাসি দিলেন আতিক সাহেব, নিজের স্ত্রীর উপর অবিশ্বাস থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।আপনার স্ত্রী আপনার সাথে থাকেন না প্রায় মাস খানেক। কি তাইনা? তারপর নিজের একাকিত্ব ভুলতে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। এরপর ধরলেন নেশা। সেখান থেকে আপনার চোখ গেল বাড়ির মালিকের মেয়ে নীলার দিকে। মেয়েটিও ছাদে বসে একা নেশা করত সেটা আপনি জানতেন। এ বাড়ির সবাই সেটা জানে কিন্তু কাউকে বলেনি। আপনি সেটা টের পেয়ে যান। তারপর সেদিন সুযোগ বুঝে ছাদে যান মেয়েটিকে একা পেয়ে নিজের স্বার্থ খাটাতে চান, পারেন নি! তারপর লজ্জা ভয়ে মেয়েটিকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে...
প্লিজ আমি সরি, আমি ইচ্ছে করে করিনি। (হাত জোড় করে কেঁদে ফেললেন তিনি)
সেটা আমরা জানি মিস্টার বাবু, নেশায় মানুষের মাথায় হুশ থাকে না।
বাড়ির নীচে এতক্ষনে পুলিশের গাড়ির সাইরেন বেশ জোরেশোরে বেজে উঠেছে।
আতিক সাহেবের এখন থানায় যেতে হবে। লাল কালিতে এই কেস ক্লোজ করার কাজটা বাকী আছে তার।  



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

উত্তপ্ত পৃথিবী এবং চল্লিশ ডিগ্রি

  সাম্প্রতিক সময়ে হিট ওয়েভ এর প্রভাব (ছবিঃ Google) পৃথিবী কেন গরমঃ                       ধরা যাক, একটি কাপে বেশ গরম চা এবং অন্য একটি কাপে ফ...