রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২

ছোটগল্পঃ করোনাকাল

 আজ রিমির জন্মদিন। বয়েস এখন ১৬, স্কুল বন্ধ থাকায় আনিতা, বীনা, রেখা ওদের সাথে মিলেমিশে আজ জন্মদিন টা পালন করা হচ্ছে না। তাই রিমির মন অনেক খারাপ। জন্মদিনের দিনটি শিশু থেকে বুড়ো সবারি মনের ভেতর টা নরম হয়ে যায়, নানারকম চিন্তাভাবনা ঘিরে বসে দ্রুত। কেমন ছিল আজকের দিন? বয়েস বেড়ে যাচ্ছে, আচ্ছা? আর কতদিন বাঁচব? এরকম নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খায় মনের ভেতর।

রিমির তেমনি হচ্ছে। মা অসুস্থ, বাবা কোয়ারেন্টিনে আছেন। বড় বোন সামিহা এখন একলা বাসার সব কাজ করছে। মায়ের জমানো টাকা থেকে চলছে মাসের বাজার। বাবার চাকরি গেছে করোনার দ্বিতীয় বছরে। আপাতত একটা রকমারি দোকানে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি কিন্তু করোনা আক্রান্ত হয়ে অভাবের থাবা এসে পুরোপুরিভাবে পড়েছে সংসারের ঘাড়ে। 

আপা! কি করছিস? 

সামিহা রান্নাঘরে ভাত রান্না করছে। চোখেমুখে ঘাম আর বিরক্তির রেখা স্পষ্ট! মুখে বিরক্তি এনে ই বলল, " দেখছিস না কি করছি! যা ভাগ!"

রিমির মন আজ অনেক দূর্বল, সম্ভবত জন্মদিনের দিনটি সবারি এমন হয়। নিজের রুমে ফোন হাতে নিয়ে ই দেখল বান্ধবীরা জন্মদিনের উইশ করেছে ইনবক্সে। ক্লাসের এক ম্যাম শুভেচ্ছা জানিয়ে খোঁজ ও নিয়েছে পাশাপাশি।

দুপুরবেলা সবাই এখন আলাদা খাওয়াদাওয়া করে। সামিহার কাঁধে পুরো দায়িত্ব। অর্নাস ক্লাসে ভর্তির পর ক্লাসের চেয়ে সংসার সামলাতে গিয়ে মেয়েটা গার্হস্থ্য লাইফ টা শেখায় লেটার মার্কস পাবে। এরকম চলতে থাকলে মেয়েটির বাবা-মা ও ভাল ছেলে খুঁজে ফেলবেরন অদূর ভবিষ্যৎ এ সেটা হয়ত অনুমান না করে ই বলা যায়। 

রিমি ঘুমাচ্ছে। ক্যালেন্ডারের পাতায় গতবছরের লাল দাগ এখনো জ্বলজ্বল করছে। নতুন ক্যালেন্ডার সেভাবে গুরুত্ব পায়নি এ বছর। জন্মদিন হবে না জেনে শুয়ে পড়েছিলো মেয়েটি। 

হঠাৎ ডাকাডাকি তে ঘুম ভাঙল রিমির!

ওঠ মা! এই রিমি! 

বাবা মা কাছাকাছি দূরে দাঁড়িয়ে। হোমমেড কেক, সামিহা করেছে নিজে ই। কেকের দিকে তাকিয়ে আনন্দে চোখের কোণা ভিজে এলো রিমির। শুভ জন্মদিন রিমি!


(সমাপ্ত)


উত্তপ্ত পৃথিবী এবং চল্লিশ ডিগ্রি

  সাম্প্রতিক সময়ে হিট ওয়েভ এর প্রভাব (ছবিঃ Google) পৃথিবী কেন গরমঃ                       ধরা যাক, একটি কাপে বেশ গরম চা এবং অন্য একটি কাপে ফ...