শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

ছোটগল্পঃ গুজব

ভারী সুটকেস টেনে হিঁচড়ে লোকাল বাসের সিঁড়ি ধরে আধেক উঠিয়ে ফেলেছে যুবক। বিকেলের দিকে এদিকে জ্যাম কম। শহরের বুকে রৌদ এখনো তার রাজত্ব পুরোপুরি কায়েম করতে পারেনি। শীতের একটা হালকা আমেজ রয়ে গেছে।
ওই মিয়াঁ! নামান এইটা! এত্ত ভারী মাল রাখবেন কই?
(গলা খাঁকড়ি দেয় বাসের হেল্পার)
সাবধান!!  হাত দিবেন না ব্যাগে। যুবক চঞ্চল, তড়িঘড়ি করে ব্যাগ একটা সাইডে টেনে বসে গেলো বাম দিকের সারিতে একটা ফাঁকা সিটে।
পাশে বসা আরেকজন মাঝবয়েসী লোকের সাথে হালকা চোখাচোখি হলো তার। বাসে ভীড় কম তবে, প্রতিটি সিটে ই লোক বসা। অন্য সময় হলে এত্ত ভারী সুটকেস হয়তোবা বাসে উঠাতে ই দিতো না হেল্পার।
রাস্তা ফাঁকা থাকায় সিগন্যালে আটকাতে হলো না। অপেক্ষাকৃত দ্রুত সময়ে যে যার মতন নেমে গেলেন বাস থেকে।
কৌতূহল কিন্তু থেকে গেলো বাকী যাত্রীদের মাঝে। অনেকে পেছনে বসে বারবার ব্যাগের দিকে খেয়াল করছিলেন সেইসাথে যুবকের দিকে। গুজবের শহর ঢাকা। এই ব্যাগে অনেককিছু থাকতে পারে। সন্দেহ দানা বাঁধায় পেছনে বসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণ তার স্যোশাল একাউন্ট থেকে আড়ালে ব্যাগসহ ঐ অচেনা যুবকের ছবি তুলে শেয়ার করে দিল এই বলে, গতিবিধি সন্দেহজনক! লোকেশন...
মুহূর্তে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারে ভরে গেলো তরুণের স্যোশাল কমেন্ট বক্স।
কেউ বলছে ধরেন ভাই! বাইন্ধা রাখেন!
অন্যজন বলছে, ভাই! লোকশন টা ভাল করেন বলেন। আমরা কাছাকাছি আছি!
বইমেলা চলছে শহরের বুকে, আজ ফেব্রুয়ারি!
ভাষায় দিবস। যে ভাষার জন্য শহীদ হয়েছিল সালামা, বরকত,  জব্বার! সেই বাংলা তে গালী ও দিলেন অনেকে।
যুবক কে নিয়ে বাস অনেকদূর চলে এসেছে। বাস বেশীদূর হয়ত যাবে না। কারণ, পথে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে বইমেলা চলছে। চুলচেরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জনৈক যুবক কে নামতে দেয়া হলো না। তাকে ধরা হলো কলার খামচে। কেউ একজন বেশ রুঢ় গলায় বলল, " শালা! ব্যাগে কি আছে? খুইল্ল্যা ক' নাইলে আইজকা তুই শ্যাষ!"
লোকেশন পেয়ে আরো লোক এসেছে।
ভীড় জমে গেলো। কেউ একজন অতিউৎসাহী হয়ে ঘুষি মেরে বসলো যুবকের মাথায়। এরপর কিল, ঘুষি চলল কিছুক্ষণ! যুবকের শরীর হ্যাংলা। সামান্য মারে ই সে অনেকটা অচেতন হয়ে পড়ল।
পাশ দিয়ে বাজার করে ফেরা কয়েকজন নারী ফিরছিলেন। তারা পাশে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখতে থাকা কয়েকজন কে জিজ্ঞেস করতে তারা বললেন, আপা পকেটমার!! পকেটমার!!
হেল্পার সমিতি তে সম্প্রীতি যোগ দেয়া একজন পাতি নেতা মোটা স্টিল হাতে ছুটে এলো বাহাদুরি দেখাতে। আসার সময় একজন সাগ্রেদ কে বলল, "পিটাইতাছি এইটা ফেইস টু ফেইস আসা চাই! নাইলে নেতা চিনবো না, ভাল কইরা ভিডিও করবি! "
স্টিলের ঘা একটা ও পড়ল না, যুবকের কপাল ভাল বললে হয়ত ভুল হবে কিন্তু এই মুহুর্তে এটা না বলে থাকা গেলো না। পুলিশ এসেছে। ওয়ারলেসে খবর যেতে ই পুলিশ চলে আসে দলবলে। উদ্ধার হলো যুবক। তার ব্যাগ ও পাওয়া গেলো।
যুবক অজ্ঞান।
তাকে তুলে নিকটবর্তী পুলিশ ফাঁড়ি তে নেয়া হলো। রাস্তা ফাঁকা করতে উদ্যোগ নিলো ট্রাফিক পুলিশ।
জ্ঞান ফিরলো। তাকে জুস খেতে দিয়েছেন পুলিশের এরিয়া ইনচার্জ। " এভ্রিথিং আন্ডার কন্ট্রোল, ইয়েস স্যার " ওয়ালেসে খবর গেলো। পুলিশের এক্সপ্লোসিভ ইউনিট থেকে বেশ কয়েকজন লোক এসেছে তারা ব্যাগ স্ক্যান করছে। নাথিং ফাউন্ড স্যার! একজন স্যালুট ঠুকে জানিয়ে গেলো।
যুবকের নাকে মুখে রক্ত, কপাল ফেটে গেছে। স্থানীয় একজন ডাক্তার কে ফাঁড়িতে আনা হয়েছে তিনি চিকিৎসা দিচ্ছেন।
ওসি এবার প্রশ্ন করলেন, আপনার ব্যাগে কি?
যুবক চেয়ার ছেড়ে কোনরকমে উঠে ব্যাগের তালা খুলল, চেইন খুলতে যাবে এসময় আশেপাশে সবাই নিরাপদ দূরত্বে সরে গেলো।
কিন্তু ব্যাগ খোলার পর ই সবার মুখ " হা " হয়ে গেলো।
ওসি স্বাভাবিক হয়ে বললেন, একি! এতো বই! বই নিয়ে?
যুবকের উত্তর, বইমেলাতে যাচ্ছিলাম। সস্তায় যদি বিক্রি করা যায়। অনেক বই জমেছিল ঘরে। ভাবছিলাম বিক্রি করে পকেটে পয়সার টানাটানি টা আয়ত্ত্বে আনবো খানিকটা, সে আর হলো কই? আপনারা সামান্য গুজবে আমাকে তো আজ মেরে ই ফেলছিলেন।
টিভি তে যুবক তখন লাইভে। ব্যাগে নাকি বোমা পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি কথা চালাচালি, দোষারোপ চলছে তখনো।
ঐদিন রাতে, শহরের কোন এক ফ্ল্যাট বাসায়। স্কুল এবং ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া দুই বোনের আলাপ হচ্ছে।
আপা!  আপা!! দ্যাখ! যে ছেলেটা আজ ব্যাগ নিয়ে মার খেয়েছে ওর প্রোফাইল ঘেটে ছবি দেখলাম, জানিস কি কিউট!!
লোকগুলো কি ভাবে মেরেছে দেখেছিস! দাঁড়া হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে বিচার চাই। ছেলেটার নাম কি রে?


(সমাপ্ত)

শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

ছোটগল্পঃ লাশ

(১)
কেউ এদিকে খুব একটা আসে না। দুইটি বহুতল বিল্ডিং এর মাঝে সরু গলি। এখানে ছুটোছুটি করে লুকোচুরি খেলতে আসে মহল্লার কিছু বাচ্চাকাচ্চা।
তাই প্রথমে বোটকা গন্ধ টা কেউ টের পায়নি। বারেকের ছোট ছেলেটা ভোঁ.. শব্দ তুলে ঢুকে গেছিলো এই সরু গলিতে। পলিথিনে মোড়ানো একটা উঁচু মতন ঢিবির উপর পা ফসকে পড়ে যেতে ই পলিথিন আংশিক খুলে বিকৃত লাশের মুখটা বেড়িয়ে পড়ে আর তখনি ভয়ার্ত চিৎকার!
লোকজন জমে গেলো। যেখানে কেউ কোনদিন আসে নি আজ সেখানে লোকের পায়ে পা ফেলে চলতে হচ্ছে।
পুলিশ এলো। লাশ দড়ি বেঁধে বের করা হলো টেনে হিঁচড়ে। একজন পূর্ণবয়স্ক লোক সে গলিতে যেতে হিমশিম খায়। পুলিশকে সাহায্য করলো কয়েকজন সাহসী ছেলে। ওরা ই লাশের পায়ে দড়ি বেঁধে টেনে বের করে আনলো ধীরেধীরে।
মহিলার লাশ। মুখ ভারী কিছু দিয়ে থেতলে দেয়া হয়েছে। দেখে মনে হয় কমপক্ষে দশ দিন এভাবে পড়েছিল কিন্তু সেটা আনুমানিকভাবে পুলিশের ধারণা।
লাশ নেয়া হলো ময়নাতদন্ত করতে সরকারি হাসপাতালে।


(২)
দেখ! মুখের ভেতরে কি একটা যেন?
সদ্য থার্ড ইয়ারে উঠা মেডিকেলে দুই স্টুডেন্ট একে অপরকে ফিসফিস করে কানাকানি করতে দেখা গেলো।
সাইলেন্স!! ধমক দিলেন ফরেনসিকের প্রভাষক মোক্তার। তারপর বললেন, " আজ আমরা যে লাশ পেয়েছি তা ডিকম্পোজড। মানে পঁচনে অনেকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে লাশের চেহারা।
অপু একটু বাড়তি উৎসাহ নিয়ে কথা বলল, " স্যার, আমরা তো ডি এন এ টেস্ট করতে পারি "
তা পারি, কিন্তু এক্ষেত্রে অনুমোদন দরকার। পুলিশ চাইলে হাসপাতাল অবশ্যই করবে। যদি খুনের মোটিভ প্রমাণে অপরাধী সনাক্তকরণ দরকার হয়। এখন লেকচারে মন দাও।
স্যার তার ক্লাস শুরু করলেন। লাশের ভারী পঁচা গন্ধে দুজন শিক্ষার্থী বাইরে চলে গেলো। তাদের ভীষণ বমি পেয়েছে। ওরা হয়ত ক্লাসে নাও ফিরতে পারে।

(৩)
লোকাল বাসে ভীরে মোমেনার বাম হাত টা শক্ত করে চেপে ধরেছে পরিচিত বড় ভাই ছোটকু। একই গার্মেন্টস এ ছোটকু হেল্পার। মোমেনা তার ই আন্ডারে সেলাই কাজ করে। মোমেনা দেখতে সুন্দরি নয় কিন্তু চোখদুটো টানা হরিণের মতন। ছোটকুর সাথে কাজের ফাঁকে ফাঁকে আলাপ। সবার চোখে ফাঁকি দিয়ে আলাপের গভীরতা বেড়ে যায় অনেকদূর। ফোনের আলাপ, অতিরিক্ত সখ্যতা সবার আড়ালে জল ঘোলা করে ফেলে যা ঘুণাক্ষরে গার্মেন্টস এর কেউ জানতে পারেনি।
মোমেনা গরীবের মেয়ে। বড় মেয়ে, বিয়ে হয়নি। সংসারে হাল ধরার কেউ ছিল না। বোনের পড়াশোনা খরচ, বাড়ির কর্য এসব তো মুখেমুখে চুকিয়ে দেয়া যায় না। চাই টাকা! সেই টাকার খোঁজে শহরের চাকরি। সেও এলাকায় এক বড় আপা বলে কয়ে ঢুকিয়ে দিয়েছেন এই গার্মেন্টস এ। গ্রামের মেয়ে শহরে বাতাস গায়েও লাগেনি কিন্তু হাসিমুখ আর আশ্রয়ের অসামান্য প্রত্যাশায় কাঙালি হয়ে ছোটকুর হাতে হাত রাখতে, ওর চাহিদায় " হ্যাঁ " বলতে মেয়েটি সময় নেয় নি।
ছোটকু ভাই! আমরা কই যাইতাছি?
সবুর কর মোমেনা। আমার বাসায় যাবি। আমি তোরে আইজ বিয়া করলাম না কাজি অফিস গিয়া।
মোমেনা ভীরের মাঝেও মুখে উড়না টেনে একটু হাসে। এটাই মোমেনার শেষ হাসি। এরপর মোমেনা কে ছোটকুর সামনে আর হাসতে দেখেনি কেউ।


(৪)
স্যার! লাশের আগামাথা তো ডাক্তারি পরীক্ষায় কিছু বোঝা গেলো না। কথাটা বলল থানার হাবিলদার।
স্যার স্মার্টফোনে ব্যস্ত। কোথায় যেন প্রটোকল সংক্রান্ত কাজে যেতে মেসেজ এসেছে।
কিসের লাশ! মুখ না ফিরিয়ে ই জানতে চাইলেন তিনি।
ঐ যে বিল্ডিং এর চিপার লাশ টা স্যার!
ওহ! সেইটার খবর কি? নাম ধাম কিছু জানা গেলো নাকি?
না স্যার। তবে রেইপ কেইস!
এবার ওসি তাকালেন। রেইপ!! আবার সাংবাদিক!!  হাউকাউ!! এই *ল রেগুলার ই আইজকাল। শোন, এক কাজ করো। ডিটেইলস নিয়া রাখো। কেউ লাশ দেখতে আসলে হাসপাতাল মর্গে পাঠাই দিও। বেশী দেরী করা যাইবো না। সাংবাদিক *য়োর গুলা জানতে পারলে সমস্যা। দাফন কইরা দিও। দায়িত্ব কিন্তু তোমারে দিলাম পুরাটা। মতিন রে দিলে প্রমোশন কিন্তু ওর হইবো। তুমি আমার দেশী মানুষ তাই কাজ তোমারে দিলাম। তোমারে নিয়ে পত্রিকায় ছবিও আসতে পারে যদি কাজ ভাল করো।
জ্বে স্যার আপনার দয়া।
আমি চললাম এম পির বাড়ি কাজ আছে।

(৫)
লাশের ময়নাতদন্ত চলছে। ডোমের চোখে নেশার আগুন। লাশ কাটা চাট্টেখানি কাজ না। একটা মানুষ কে গরুর চামড়া ছাড়ানোর মতন ছিলতে হয় দয়ামায়াহীন ভাবে। যে মানুষ টি কিছুক্ষণ আগেও চলে ফিরেছে। হেসেছিল, কেঁদেছিল!
মাইয়ার লাশ!
সদ্য ডোমে যোগ দেয়া নুরুর চোখ চকচক করে উঠে। ভেটেরান সাথী বৃদ্ধ আব্দুলের কোন হুশ নেই। লাশের পোষাক খুলে ফেলেছে সে। হাতের ধারালো হাতুড়ি আর বাটালের দৃঢ় ঠকঠক শব্দ শোনা যেতে লাগল ময়নাতদন্ত ঘরের নীরবতা ভেদ করে। ময়নাতদন্ত শুরু।

(৬)
কলিং বেল, সেগুন কাঠের দরজা।
আয়!  পাগলি ভেতরে আয়। ভেতরে ঢুকেই মোমেনার চোখ ছানাবড়া। এত বড় বাড়িতে ছোটকু থাকে! কই কোনদিন তো ওকে ভুলেও বলেনি।
একটা মখমলের গদিতে বসতে বলে ছোটকু কোল্ড ড্রিংকস আনতে চলে গেলো অন্য একটা ঘরে।
ঘরটা ঠান্ডা। ভেতরে ফ্যান নেই। প্রচণ্ড রোদে শরীরটা ঘেমে উঠেছিল মোমেনার। মাথায়, গায়ে উড়না টেনে নিলো দ্রুত। এত বড়, দামী ফ্ল্যাটে বেশ বেখাপ্পা লাগছে এই পোষাকে। সংযত হবার জন্য তাই সামান্য প্রচেষ্টা।
ছোটকু ফিরে এলো কাঁচের একটা গ্লাসে কোক ঢেলে। এটা অনেকবার ই ছোটকুর সাথে খেয়েছে মোমেনা। ওর পার্কে ঘুরতে যেতো ছুটির দিনে। মোমেনা হাসিমুখে গ্লাস নেই।
ছোটকু বলে, আরে! দেরী করিস না! নে খা! জলদি খা।
মোমেনা ইতস্ততভাবে মুখে দেয় কোক। মিনিট পাঁচ পরে আর কিছু মনে নেই।
জ্ঞান ফিরলে মোমেনা বুঝতে পারে। কোনকিছু আর স্বাভাবিক নেই এখানে। ঘরে অন্ততপক্ষে পাঁচজন লোক। সিগারেট আর মদের বোতন দেখা যাচ্ছে ঘোলা চোখে।
মোমেনা উঠতে না উঠতে আরেকজন ওর উপর চড়ে বসে। মোমেনার চিৎকার করে উঠে!
ছোটকু ছুটে আসে, এই চোপ শালী!! কথা কইবি না!!
মোমেনা হাত পা ছোঁড়ে।
ছোটকু মোমেনার হাত চেপে ধরে।
ছোটকু সুন্দরবনের আগ্রাসী বাঘ। একটিমাত্র হরিণ তার ক্ষুধা মেটাতে পারেনি কোনদিন আর পারবেও না।

(৭)
লাশের শরীর থেকে অধিকাংশ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রেখে দেয়া হলো মেডিকেলের এনাটমি ক্লাসের কথা মাথায় রেখে। বেওয়ারিশ লাশ! পুলিশ তুলে দিলো হাসপাতালের মর্গে। পড়াশোনার খাতিরে ঢুকে গেলো মোমেনা। সুন্দর হাসিমাখা মুখখানায় এখন মাংসটুকু নেই, বেড়িয়ে আছে ভয়ংকর দু-পাটি দাঁত, নাকের জায়গায় সরু গর্ত। ব্রেইনের অংশ পুরোপুরিভাবে ফাঁকা যেন একটি মগ বসানো হয়েছে মোমেনার মাথার উপর। শরীর শুকিয়ে কালশিটে হয়ে গেছে।
এইটা ক্লাসে দিয়া লাভ নাই! বুঝলি!
ক্যান?
রাইতে এনাটমি ল্যাবে আইসা নিয়া যামু, হাড্ডি গুলান ভাল। কোন ডিফেক্ট নাই। পুরা সেট জানুয়ারি তে বেঁচা যাইবো।
পুলিশ যদি ফিরা আসে।
ধূর *ল!! আইবো না। বুঝলি আমি কি কইলাম?
আইচ্ছা।

(৮)
মোমেনার খোঁজে আর কেউ আসে না। ওর বোন টা কোন এক বিবাহিত পুরুষের হাতে হাত রেখে পালিয়ে গেছে। মোমেনার মা এখন পাগল।
মাঝেমাঝে গ্রামের দুয়ারে তাকে থলি হাতে দেয়া যায়। কেউ খেতে দিলে সে খায় নয়তো ধূলোয় মাখামাখি করে পড়ে থাকে।
হুশ ফিরলে " মোমেনা!! আমেনা!!  তোরা কই গেলি বলে ডাকতে থাকে।
গার্মেন্টস এ নতুন লোক আসে মোমেনার জায়গায়। তার নাম শেফালি। নাক বেশ লম্বা তবে কথা বেশী বলে। হেল্পার ছোটকুর মনে ধরেছে এই মেয়েটিকে। আগামীকাল ওর সাথে আইসক্রিম খাবার কথা হয়েছে।


(সমাপ্ত)


(এই গল্পের সমস্ত চরিত্র, ঘটনা, সময় কাল্পনিক। এর সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই, উল্লেখিত সমস্ত কথোপকথন কাল্পনিক এবং নিছক গল্পের খাতিরে লেখা)

উত্তপ্ত পৃথিবী এবং চল্লিশ ডিগ্রি

  সাম্প্রতিক সময়ে হিট ওয়েভ এর প্রভাব (ছবিঃ Google) পৃথিবী কেন গরমঃ                       ধরা যাক, একটি কাপে বেশ গরম চা এবং অন্য একটি কাপে ফ...