সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯

ছোটগল্পঃ বন্ধু

কেমন আছিস?
প্রশ্নটা শুনে অবাক হয়নি অন্তু, জানালায় মাথা রেখে বাইরে সোডিয়াম আলোতে হারিয়ে যাওয়া গাছগুলোকে একনজরে দেখছিল সে। ঈষৎ হলদে আলোর মাঝে অন্ধকারের এক অবিচ্ছিন্ন এক মেলবন্ধন সেখানে।
কিরে? প্রশ্নটা আবার এলো,
মাথা টা কিঞ্চিৎ বা'দিকে ঘুরিয়ে দেখল শ্যাম এসেছে, শ্যাম পাল। ওর সবথেকে কাছের বন্ধু।
ভালো! ছোট্ট করে উত্তর এলো।
-একটা শীত শীত ভাব না বাইরে, কেমন একটা গন্ধ ও আসছে। কি ফুল?
-বেলী!
এক নিঃশ্বাসে ঘ্রাণ নিলো শ্যাম। আমার প্রিয় ফু.. কথাটা শেষ করতে পারলো সে, বাধা দিয়ে অন্তু বলল প্লিজ তুই আর আসিস না এখানে। আমার পছন্দ না। তুই থাকলে আমার ভাল লাগে না। তুই অসহ্য যন্ত্রণা! তুই কেন জোরাজুরি করতে গেলি আমার সাথে? দেখছিলি তো প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল!
শ্যাম বিরক্ত হয়েছে কিনা বোঝা গেলো না, ওর মুখ এখন আধাঁরে-আলোতে হারিয়ে। সেখান থেকে কথা বলল,
-আমরা কিন্তু ভাল বন্ধু অন্তু, সেই স্কুল থেকে। তুই যেদিন চক্রবর্তী স্যারের ড্রয়িং করিস নি, সেদিন কে একেঁছিল তোর খাতায়? ছাদে কে তোর সাথে ফুটবল খেলেছে ঝুম বৃষ্টিতে?
অন্তু মাথা নিচু করে কাঁদছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে.. ভেজা গলায় বলল তবুও আসিস না।
শ্যাম পাল নিশ্চুপ, কোন কথা বলল না। সম্পূর্ণ নীরবতা এই মুহূর্তে।
বুনো একটা পাখি হঠাৎ ডেকে উঠল পাশের সরু নারিকেল গাছে, সেখানে আলো নেই। পাশাপাশি বাড়ি গুলোতে শ্মশানের মতন শব্দহীন।
অন্তু ফের বাইরে তাকিয়ে রইল, কিন্তু সে এখন এখানে সশরীরে থাকলেও তার মস্তিষ্ক এখানে নেই। সে এখন স্কুলের মাঠে, গোলকিপার।
প্রতিপক্ষ দলের স্ট্রাইকার এগিয়ে আসছে অনেকগুলো ডিফেন্ডার কে কাটিয়ে, কাছাকাছি এসে সে অন্তুকে দেখে হাসি দিল। শর্ট নিল সজোরে, বল জাপটে ধরতে গিয়ে সেটা লাগল মাথায়, এরপর দৃশ্য পরিবর্তন দ্রুত। অন্তু এখন শ্যামদের বাসায় ছাদে ফুটবল খেলা চলছে।
পারবি না! পারবি না!  বলে ভেংচি কাটছে শ্যাম। অন্তুর পছন্দ হলো না। ওর শার্টের জামা খামচে ধরতে গিয়ে পিছলে গেলো শ্যাম। কিছু একটা ভারী পড়ে গেলো চারতলা ছাদ থেকে।
আচমকা ভয়াবহ চিৎকার দিয়ে সম্ভিত ফিরে পেলো অন্তু!
দরজা ঠেলে অন্তুর বাবা-মা ঘরে এলেন, বাবা! ভয় পেয়েছিস? কি হয়েছে?
অন্তু দেখলো, ঠিক যেখানে এতক্ষণ শ্যাম ছিল সেখানে সে নেই।
মা..মা আ আ.. আমার শীত লাগছে..
অন্তুর মা গায়ে হাত রাখলেন, অন্তুর জ্বর এসেছে।
অন্তুর বাবা ফোনে ডায়ল করলেন, ডাক্তার শুভ্র! একটু ইমারজেন্সী! আসতে পারবেন এখন। উত্তর এলো, হ্যাঁ।
ডাক্তার চলে যাচ্ছিলেন, উদ্বিগ্ন বাবা-মা তার হাত চেপে ধরলেন, এরোটোমেনিক ডিল্যুশনস! কাছাকাছি থাকুন। পারলে দূরে কোথাও ঘুরে আসুন। এখানে থাকলে উন্নতি হওয়া টা কঠিন। যে বেঁচে নেই তাকে নিয়ে ই একটা কাল্পনিক জগতে বাস করছে অন্তু। সিঁড়ি ধরে এগিয়ে চললেন ডাক্তার।



(গল্পের ঘটনা ও চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই। যদি।মিলে থাকে তা একান্ত কাকতালীয়)

উত্তপ্ত পৃথিবী এবং চল্লিশ ডিগ্রি

  সাম্প্রতিক সময়ে হিট ওয়েভ এর প্রভাব (ছবিঃ Google) পৃথিবী কেন গরমঃ                       ধরা যাক, একটি কাপে বেশ গরম চা এবং অন্য একটি কাপে ফ...